অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মো. আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান পৃথক দুই মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
একই সঙ্গে দুই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৭ জুন দিন ঠিক করে আদালত।
দুটি মামলায়ই মালেক আসামি এবং একটিতে তার সঙ্গে স্ত্রী নার্গিসকেও আসামি করা হয়।
গত ১৮ এপ্রিল দুই আসামির পক্ষে অব্যাহতির আবেদনের শুনানি করেছিলেন তাদের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম অনি।
শুনানিকালে আব্দুল মালেককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তার স্ত্রী নার্গিস জামিনে থেকে আদালতে হাজিরা দেন।
মালেকের পক্ষে তার আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। বিচারক আগামী ১৯ মে জামিন শুনানির তারিখ ঠিক করেন।
দুদকের পক্ষ থেকে এর আগে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আর্জি জানানো হয়। শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১১ মে দিন ঠিক করেছিলেন বিচারক।
সে অনুযায়ী বিচারক আজ অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিরা দোষী না নির্দোষ জানতে চান। এ সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। এরপর আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ দুটি মামলা করেন।
প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়, মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চাকরিকালে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে মোট ১ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা বা ভিত্তিহীন ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অবৈধ সম্পদ অর্জন করে ও তা ভোগদখলে রেখে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অপর মামলায় মালেকসহ তার স্ত্রী নার্গিসকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ পরিমাণ সম্পদ আসামি নার্গিসের ভোগ-দখলে রাখার ক্ষেত্রে মালেক প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা ও দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়।
২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর এই মামলায় নার্গিস আক্তার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। সেই আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে মালেককে গ্রেপ্তার করে র,্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ টাকার বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এরপর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়।
গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় মালেককে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।