কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সোনালী ব্যাংক মোড় থেকে উলিপুরের দুর্গাপুর ইউনিয়নের আনন্দ বাজার মোড় পর্যন্ত যেতে হলে ১২ কিলোমিটার রাস্তায় গুনে গুনে ৭২টি বাঁক নিতে হবে। বাঁকের সঙ্গে নানা জায়গায় আছে খানাখন্দ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এত বাঁকের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। খানাখন্দ দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আফজাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই রাস্তায় এক থেকে দেড়শ ফিটের মধ্যে ছয়টি বাঁক আছে। এত বাঁকওয়ালা রাস্তা কুড়িগ্রামের আর কোথাও নেই। বলতে গেলে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা লেগে আছে। তবুও বাঁকগুলো সোজা করে না।’
রতন মিয়া বলেন, ‘আনন্দ বাজার থেকে রাজারহাট পর্যন্ত ছোট-বড় মিলে শতাধিক মোড় আছে। রাস্তায় কোনো বৈদ্যুতিক বাতি নাই। রাতে চলাচল করা খুবই কষ্টকর। আগে এখানে প্রায়ই ছিনতাই হতো। এখন রাস্তার ধারে বাড়ি-ঘর হওয়ায় সেগুলো কমেছে।’
ব্রিটিশ আমলে এখানে একটি মাটির রাস্তা তৈরি করা হয়। কয়েক দশক আগে সরকারিভাবে ওই রাস্তাটি ১০ ফুট প্রশস্ত করে পাকা করা হয়। তবে বাঁকগুলো যেমন ছিল তেমনই রাখা হয়েছে।
এখন এটি রাজারহাট থেকে উলিপুর যাওয়ার বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিদিন হালকা থেকে ভারী বহু যানবাহন এই সড়ক ব্যবহার করে।
ঢাকা থেকে আসা পিকআপ ভ্যানের চালক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘ঢাকা থেকে আসতে যে কষ্ট হয়নি তার চেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছে রাজারহাট থেকে আনন্দ বাজারের এই সড়কে। এই রাস্তা দিয়ে গেলে ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার পথ কমে যায়। এতে সময়, তেল দুই বাঁচে।
‘প্রায় সময়ই গাড়ি সাইড দিতে গিয়ে বাঁক আর রাস্তা চিকন হওয়ার যানবাহন উল্টে যায়।’
অটোচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এই রাস্তায় এমন বাঁক যে বিপরীত দিক থেকে কোনো যানবাহন আসলে বোঝার উপায় নাই। লাইটের ব্যবস্থা না থাকায় রাতের বেলা চলাচল করা যায় না। অনেক জায়গায় ভাঙাচোরা। গাড়িরও ক্ষতি হচ্ছে রাস্তার কারণে।’
চাকিরপশার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার জানা মতে ১২ কিলোমিটার রাস্তায় ৭২টি বাঁক আছে। রাস্তার পাশেই পুকুর। লাইটের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাঁক সোজা করে রাস্তা চওড়া করার পাশাপাশি লাইটের ব্যবস্থা করা গেলে আমার মনে হয় দুর্ঘটনা কমে আসবে।’
নিউজবাংলার প্রতিনিধিও গুনে দেখেছেন, এই রাস্তায় আসলেই ৭২টি বাঁক আছে। এর বাইরেও কিছু হালকা বাঁক আছে।
এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরে তাসনিম বলেন, ‘আমরা সড়কটি নিয়ে আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর প্রক্রিয়া চলছে। কোনো সিদ্ধান্ত এলে সেই অনুযায়ী উদ্যোগ নেয়া হবে।’