হত্যাচেষ্টা মামলায় এলডিপির একাংশের মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবার রাত ৮ টার দিকে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিক।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মজিবুর রহমান।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, ছাত্রলীগের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সোমবার বিকেলে হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। চান্দিনা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবলীগের আহ্বায়ক আকলাকুর রহমান জুয়েল বাদী হয়ে ১৯ জনকে নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৬/৭ জনকে আসামি করেন।
এই মামলা রেদোয়ানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। পরে এলডিপি নেতাসহ চার আসামিকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
২০০১ সালে রেদোয়ান বিএনপির মনোনয়নে কুমিল্লা-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ওই সরকারের শাসনামলের শেষ দিকে বিএনপি থেকে বেরিয়ে তিনি লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে (এলডিপি) যোগ দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ জানান, চান্দিনা কলেজ মাঠ এলাকায় সোমবার ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও এলডিপির নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে শুরু হয় ছাত্রলীগের অনুষ্ঠান।
এলডিপির অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৪টা থেকে। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুপুর ২টার দিকে কলেজ এলাকার দিকে যান এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ। সমাবেশ স্থলের বাইরে ছাত্রলীগ নেতাদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। রেদোয়ানের গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়া হয়।
পরে তিনি গাড়ি থেকে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়েন। এর পর ছাত্রলীগের হামলা থেকে বাঁচতে গাড়ি নিয়ে থানায় যান। পুলিশ তখন এলডিপি নেতা, তার গাড়ি চালক রেজাউল করিম, অনুসারী মো. আলী ও বাকি বিল্লাহকে আটক করে।
একই মাঠে অনুষ্ঠান ডাকার বিষয়ে পৌর এলডিপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদ পুনর্মিলনী করতে ঈদের পর থেকেই আমন্ত্রপত্রের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেই। এর আগে আমরা কলেজ অধ্যক্ষ থেকে অনুমতি নিয়েছি।
‘আমাদের অনুষ্ঠান বানচাল করতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই সমাবেশের ডাক দেয়। আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে তারা আমাদের নেতা রেদোয়ান আহমেদের গাড়িতে হামলা চালায়।’
তবে চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি কাজী জামিল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের আগে আমরা ঈদ পুনর্মিলনী করার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা সকাল থেকে অনুষ্ঠানস্থলে ছিলাম। দুপুরে রেদোয়ান সাহেব আমাদের অনুষ্ঠানস্থলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের দুই কর্মীকে গুলি করে। তারা এখন হাসপাতালে আছেন।
দুপক্ষকেই পুলিশ প্রশাসন থেকে অনুষ্ঠান না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘নিষেধের পরও তারা অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দেন। সোমবার সকাল থেকে কলেজ ও আশেপাশে অবস্থান নেয় পুলিশ। তারপর সংঘাত এড়ানো যায়নি।’
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাকিবুল হাসান বলেন, ‘সমাবেশ করার জন্য কোনো পক্ষই আমাদের অনুমতি নেয়নি। তবে রোববার দুপুরে ছাত্রলীগ উপজেলা প্রশাসন বরাবর একটি আবেদন করে। আমরা সেই আবেদনে অনুমতি দেই নাই। তবে এলডিপি থেকে কোনো প্রকার আবেদন করা হয়নি।’