বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিটিই শফিকুলকে নিয়ে গর্বিত মা-বাবা

  •    
  • ৯ মে, ২০২২ ১৯:৪৩

স্বজনরা জানান, অভাবের সংসারে ছোটবেলা থেকেই টিউশনি করে পড়াশোনা করেছেন শফিকুল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে অনার্স করা অবস্থায় প্রায় ৯ বছর আগে বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি পান তিনি। চাকরি করা অবস্থায়ই পরে তিনি মাস্টার্স শেষ করেন।

সন্তানের সততা এবং দায়িত্ব পালনে আইনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ায় টিটিই শফিকুল ইসলামের মা-বাবা গর্বিত। তবে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

সম্প্রতি টিকিট না করে ট্রেনে চড়ায় রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের জরিমানা করে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন শফিকুল।

রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) শফিকুল ইসলামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম রজব আলী বিশ্বাস।

গ্রামে থাকার সময় টিউশনি করে খরচ চালাতেন শফিকুল। সেই সূত্রে নিজ এলাকায় তাকে ‘শফিকুল স্যার’ বলেই অনেকে সম্বোধন করেন।

সারুটিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র ১০ শতক জমির ওপর টিনের ঘরে বসবাস করেন তার মা-বাবা ও দাদি। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় শফিকুল। ছোট ভাই চাকরি করেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। আর বোনের বিয়ে হয়েছে নিজ গ্রামেই।

মাটির গাঁথুনির ওপর টিনের চাল ও বেড়া দেয়া ঘরে বসবাস করেন শফিকুলের মা-বাবা। নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন বাবা রজব আলী।

স্বজনরা জানান, অভাবের সংসারে ছোটবেলা থেকেই টিউশনি করে পড়াশোনা করেছেন শফিকুল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে অনার্স করা অবস্থায় প্রায় ৯ বছর আগে বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি পান তিনি। চাকরি করা অবস্থায়ই পরে তিনি মাস্টার্স শেষ করেন।

এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত শফিকুল ইসলাম স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বর্তমানে পাবনার ঈশ্বরদীতে বাস করেন।

শফিকুলের সাম্প্রতিক বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে বাবা রজব আলী বলেন, ‘আমার ছেলে তো কোনো অন্যায় করেনি। তাহলে তাকে কেন শাস্তি দেয়া হয়েছিল। এখন না হয় বরখাস্ত উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার রেশ ধরে যদি ভবিষ্যতে কিছু করে, তাহলে কী হবে?’

তিনি বলেন, ‘ছেলে যা করেছে তাতে আমরা গর্বিত। সে যা করেছে আইন মেনেই করেছে।’

এই বাড়িতেই থাকেন শফিকুলের বাবা-মা

শফিকুলের মা সুকোরন নেছা বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে আমার ছেলেকে মানুষ করেছি। কষ্ট করে সে লেখাপড়া করেছে। কোনোদিন কোনো মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি। ঘুষ খায়নি। তার আইনে যা আছে সে তাই করেছে। সৎ থেকে যদি চাকরি চলে যায়, তাহলে কি আমাদের কষ্ট লাগবে না?’

শফিকুলের সঙ্গে যেন আর কোনো অন্যায় না হয় দাবি করে সুকোরন নেছা বলেন, ‘আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’

প্রতিবেশী ও স্থানীয় মাতব্বর মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘শফিকুল খুব ভালো ছেলে এবং সৎ। তা না হলে তার পিতা এখনও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে নাকি? রেলের টিটিই পদে চাকরি করে যদি ঘুষ খেত তাহলে এখন তাদের পাকা বাড়ি থাকত।’

সারুটিয়া গ্রামের লুৎফর রহমান বলেন, ‘সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এভাবে রোষানলে পড়লে মানুষের মাঝে সততা আর থাকবে না। এখন তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে যেন তার কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে সরকার যেন খেয়াল রাখে।’

এ বিভাগের আরো খবর