বিএনপিকে নিজেদের আত্মহননের পথ থেকে বাঁচাতেই আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময় নানা পরামর্শ দিয়ে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার রাজধানীতে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পরমাণুবিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর ‘ওবায়দুল কাদের বিএনপির উপদেষ্টা’ বক্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো বিএপির মঙ্গলই চাই, আমরা বিএনপির মঙ্গল চাইলেও তারা নিজেরা আত্মহনন চায়। তারা যে সব পদক্ষেপ বিভিন্ন সময়ে নিয়েছে বা নিচ্ছে এগুলো আত্মহননমূলক।
‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপিকে আত্মহননের পথ পরিহার করার পরামর্শ দিয়েছেন, যেটি সঠিক পরামর্শ। এখন তারা সেটি গ্রহণ করবে কি করবে না, কি ক্রমাগতভাবে আত্মহননের পথে হাঁটবেন, সেটি বিএনপির ব্যাপার।’
বিএনপিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আসার আহ্বানও জানান সম্প্রচারমন্ত্রী হাসান মাহমুদ।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘সরকারের পদত্যাগ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না’ বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। আমাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক, তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক। কিন্তু বিএনপিকে নির্বাচন ভীতিতে পেয়ে বসেছে। আসলে নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা কথাটি এ ক্ষেত্রে বিএনপির জন্য প্রযোজ্য। আশা করব, বিএনপি নির্বাচন ভীতি কাটিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
মিলাদ মাহফিলে প্রয়াত পরমাণুবিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়াকে নিরহংকার, প্রচারবিমুখ, অনুকরণীয় প্রাণের দৃষ্টান্ত বলে বর্ণনা করেন ড. হাছান মাহমুদ।
মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবির, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ অংশ নেন।
ড. ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু আমি আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশেষ সহকারী হিসেবে বেশ কয়েক বছর কাজ করেছি, সে জন্য তাকে নিয়ে আমারও কিছু স্মৃতি আছে।
‘তিনি একজন নিভৃতচারী, নিরহংকার, মিতভাষী মানুষ ছিলেন। সবাইকে আপন করে নিতেন। তিনি যে জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রীর স্বামী, সেটি অনেকেই জানতেন না। নিজ গুণে, নিজ নামেই পরিচিত এই মানুষটি একজন গবেষক ছিলেন, তার গবেষণালব্ধ বই ভারতে পাঠ্য বই হিসেবে ব্যবহার করা হয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ পরিবারের সদস্যরা জঘন্য হত্যাকাণ্ডে নিহত হওয়ার পর দুঃসহ বেদনাক্লিষ্ট বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাকে সাহস দিয়ে আগলে রাখার মহান ও দুরূহ কাজটি ড. ওয়াজেদ মিয়া করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি আমলে নানা মানসিক নির্যাতন এবং পরে জরুরি অবস্থার সরকারের সময় শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার ফলে তার ওপর যে মানসিক নির্যাতন হয়েছে, তারপর ড. ওয়াজেদ মিয়া যে অসুস্থ হয়ে পড়েন, সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারেননি। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।’