বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টা, দামে কিছুটা স্বস্তি

  •    
  • ৯ মে, ২০২২ ১৪:২১

কৃষক রমিজ উদ্দীন বলেন, ‘আমি প্রতি বছর সাত বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করি। প্রতি বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মণ ফলন হয়। এবার ৪০ মণের বেশি পাওয়াও ভাগ্যের ব্যাপার। তবে দাম থাকায় আশা করছি খরচ উঠে আসবে।’

কয়েক দফা কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙে গেছে ভুট্টার গাছ। সেই সঙ্গে ভেঙেছে কৃষকের স্বপ্নও। তবে কিছুটা আশা দেখাচ্ছে বাজারে ভুট্টার দাম।

দাম ভালো হওয়ায় চাষিরা ব্যস্ত ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টাগুলোই ঘরে তুলতে। বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, ভুট্টা সংগ্রহে সকাল থেকে চাষিদের কর্মব্যস্ততা।

এ সময় কথা হয় বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সঙ্গে।

সদর উপজেলার চিলারঙের কৃষক সইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবার আমাদের গ্রামে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছিল। ফলনও বাম্পার হতো, কিন্তু এর মাঝে শিলাবৃষ্টি আর কালবৈশাখীর কারণে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।

‘এখন বাজারে ভুট্টার দাম ভালো যাচ্ছে। তাই লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারব বলে আশা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভুট্টা বিক্রি করতে চাই।’

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃষক রমিজ উদ্দীন বলেন, ‘আমি প্রতি বছর সাত বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করি। প্রতি বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মণ ফলন হয়। এবার ৪০ মণের বেশি পাওয়াও ভাগ্যের ব্যাপার। তবে দাম থাকায় আশা করছি খরচ উঠে আসবে।’

বেগুনবাড়ী এলাকার কৃষক মিঠু রহমান দামের কারণে কিছুটা কম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভের মুখ দেখবেন না বলে জানান।

তিনি বলেন, ‘এবার মাঠেই ৮২ কেজির কাঁচা ভুট্টার বস্তা ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি করেছি। গতবার বিক্রি করেছি সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকায়। দাম থাকায় ভুট্টার ক্ষেতটা আমার কাছে অক্সিজেনের মতো মনে হচ্ছে। দামে আমি খুশি। ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। ঝড় না হলে ভালো লাভ হতো।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার ঠাকুরগাঁওয়ের ৩৩ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে রবি ভুট্টা এবং ১৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা চাষ হয়েছে। মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার ৮৮৭ টন।

এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৬৪৮ হেক্টর জমির রবি ভুট্টা কাটা হয়েছে, যা থেকে ফলন এসেছে ৮১ হাজার ৮৩৪ টন।

যারা একটু পরে গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা লাগিয়েছিলেন তাদের ক্ষতির পাল্লাটা ভারী। এই ভুট্টার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ২৩৯ টন। তবে প্রায় পুরোটাই এখন ক্ষেতে পড়ে যায়।

আকচা মুন্সিপাড়া গ্রামের হাসেম আলী বলেন, ‘মাঝে দফায় দফায় শিলাবৃষ্টি হওয়ায় মোচা আসার আগেই ডাঁটা ভেঙে গেছে। অনেক গাছ আবার নুইয়ে পড়েছে। তাই ফলন ভালো হয়নি।

‘আমার মতো যারা গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা লাগিয়েছে, তারা লোকসানে পড়বে। উৎপাদন খরচ উঠে আসাও কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।’

ভুট্টা ব্যবসায়ী আখতার হোসেন জানান, এবার ভুট্টার ফলন ভালো না হওয়ায় অনেক টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তবে ভালো মানের দানাদার ভুট্টা মিলছে না। ঝড় বা শিলাবৃষ্টির কারণে যেসব গাছ হেলে গেছে বা পড়ে গেছে সেসবে ভুট্টার দানা খুব একটা ভালো হয়নি।

ঠাকুরগাঁও থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় শ ট্রাক ভুট্টা জেলার বাইরে যাচ্ছে বলে জানান আখতার।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঝড়ে ২ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৪২ হেক্টর।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হোসেন বলেন, ‘এবার কয়েক দফায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে ফলন ব্যাহত হয়েছে। এখনও যে পরিমাণ ভুট্টা মাঠে আছে তাতে লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য আসতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর