কিরগিজস্তানে মানব পাচারের শিকার হয়েছেন ১৩ বাংলাদেশি। ভুক্তভোগী ও স্বজনদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাদের উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করেছে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর।
তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারি সহযোগিতা চেয়ে রোববার দুপুরে যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
পাচারের শিকার ১৩ জন হলেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার আসাদ্জ্জুামান, মুরাদনগর উপজেলার ওলিউল্লাহ, আলমগীর হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আবু মুসা ও জাহাঙ্গীর আলম, দেবিদ্বার উপজেলার লিমন, চান্দিনা উপজেলার শরিফুল ইসলাম, নরসিংদীর শামসুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সজল মিয়া, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার আমির হামজা, চুয়াডাঙ্গার বিপুল হোসেন ও নুরুজ্জামান।
রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘শ্রম পাচারের শিকার মানুষগুলো উদ্ধারে আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। ভিকটিম পরিবারগুলোর পক্ষ থেকেও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা তৎপরতা শুরু করেছি। এ জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের সহযোগিতা দরকার। ইতোমধ্যে দালালের বিরুদ্ধে একাধিক জেলায় মামলা হয়েছে।’
কীভাবে পাচার
কৃষ্ণ মালিক বলেন, ‘সাত মাস আগে মাহমুদুল হাসান মীর নামে একজন দালাল চুয়াডাঙ্গা, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লার ১৪ জনকে কিরগিজস্তানে গার্মেন্টসে কাজ দেয়ার প্রস্তাব দেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা করে নেন। প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় কিরগিজস্তানে যাওয়ার পর বেতন হবে ৬০০ ইউএস ডলার এবং কাজের সময় হবে ৮ ঘণ্টা।
‘ওই ১৪ জনকে কিরগিজস্তানে পাঠানোর পর তারা সঠিক কাজ ও মজুরি পাননি। তাদের একটি ছোট কাপড়ের কারখানায় কাজ দেয়া হয়। যেখানে তাদের কোনো বেতন দেয়া হচ্ছে না। তাদের বলা হয়েছে মাহমুদুল হাসান মীর তাদের কারখানার মালিকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। এ জন্য বেতন চাইলে বা বেতন না পেয়ে কাজ করতে রাজি না হলে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। ইতোমধ্যে পাঁচজন ওই বন্দিদশা থেকে পালিয়ে কিরগিজস্তানে ওয়াসিস নামে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনে আশ্রয় নিয়েছেন।’
বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘ইতোমধ্যে একজন ভিকটিম কিছুদিন আগে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন। সাতজন ভিকটিম পাচারকারী চক্রের হাতে এখনও বন্দি।’ এ অবস্থায় বন্দি ও ওয়াসিসের আশ্রয়ে থাকা ১৩ বাংলাদেশি যুবককে দ্রুত উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।