ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলমুখী হতে শুরু করেছেন মানুষ। গত দু’দিন ধরেই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঢাকায় ফিরছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। এতে ব্যক্তিগত যানবাহন ও যাত্রীবাহী পরিবহনের চাপে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।
রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাট এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১০টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার বাস ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের সারি দেখা যায়। দুপুরের পর এ চিত্র আরও পাল্টে যায়। বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে যানবাহনের চাপ। মহাসড়কের মকবুলের দোকান পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারেরও বেশি যানজট তৈরি হয়।
ফলে সকাল ১০টার দিকে যেসব যানবাহন দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এসেছে, বেশিরভাগ সন্ধ্যা পর্যন্তও ফেরিতে উঠতে পারেনি। ফেরি পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা।
গরমের মধ্যে এ দীর্ঘ সময় পারের অপেক্ষায় থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। এমন পরিস্থিতিতে ঘাট থেকে ৫/৭ কিলোমিটার দূরে যারা আছেন, তারা বাস থেকে নেমে গরমের মধ্যেই হেঁটে ফেরি ঘাটে যাচ্ছেন। কেউ কেউ হাঁটছেন আরও বেশি পথ। এসময় অনেক যাত্রীই তাদের ভোগান্তির কথা বলতে থাকেন।
সাতক্ষীরা থেকে আসা যাত্রী সম্রাট নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে ঘাটে এসেছি, এখন বাজে বিকেল ৪টা। এখনো ফেরিতে উঠতে পারিনি। তাই ৫ কিলোমিটার দূর থেকে হেঁটেই ফেরিতে যাচ্ছি। এদিকে বাস ছেড়ে দেয়ায় ওই পারে গিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে আরেক বাসে যাইতে হবে। আমাদের এইসব ভোগান্তি কি সরকার দেখে না?’
আরেক যাত্রী তাবাচ্ছুম আক্তার বলেন, ‘এই ঘাটে সব সময়ই শুনি যানজট লেগে থাকে। সরকার স্থায়ী কোনো পরিকল্পনা করতে পারে। আজকে তো অসহ্য ভোগান্তি। আমি প্রায় ৫ ঘণ্টা জ্যামে আটকে আছি। কখন ফেরি পার হব, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
যাত্রী ফিরোজ মোল্লা বলেন, ‘পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটি শেষে আবার ঢাকায় যাচ্ছি। সকালে এসি বাসের টিকিট কেটে সকাল ১০টা থেকে ঘাট এলাকায় জ্যামে বসে আছি। ঘাটে এমন অবস্থা, আগামীকাল আমার অফিস না থাকলে আমি আবার বাড়িতে ফিরে যেতাম।’
সংবাদকর্মীদের দেখে আক্ষেপ করে যাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আপনারা এই নিউজ করে কি করবেন? ঈদের সময় এমন ভোগান্তি পোহাতে হয়। সরকার তো এই ভোগান্তির সমাধান করে না।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাবউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছুটির শেষ দিন হওয়ায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল শুরু করায় এ চাপ আরো বেড়েছে।
‘এই রুটে এখন ছোট-বড় ২১টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। সকাল থেকে ট্রাক পারাপার বন্ধ ছিল, দুপুর ২টা থেকে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হচ্ছে। চেষ্টা করছি ঘাটের লোড-আনলোড ক্লিয়ার রাখতে যাতে ফেরির ট্রিপ না কমে।’