জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ধর্ষণে বাধা দেয়ায় কলেজছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে করা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার মাঝিনা এলাকা থেকে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামের ৩০ বছরের রনি মোহন্ত ও একই উপজেলার আয়মাপাড়া গ্রামের ৩২ বছরের কামিনি জাহিদ।
এর আগে শনিবার সকাল ৮টার দিকে পাঁচবিবির একটি এলাকা থেকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর ঘণ্টা দুয়েক পর ওই ছাত্রীর বড় ভাই পাঁচবিবি থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন।
জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা রোববার দুপুর ১২টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, ওই ছাত্রী বাড়ি পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনায়। একটি সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করতেন। কয়েক বছর আগে তার মারা যান এবং বাবা ঋণ খেলাপির দায়ে এক বছর ধরে জেল হাজতে আছেন। বাবা-মা না থাকায় ওই ছাত্রী ভাইয়ের বাড়িতেই থাকতেন।
ঈদের পরের দিন বুধবার তাকে বাড়িতে রেখে ভাই ও ভাবি শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান।
শুক্রবার রাতে ভাই-ভাবি বাড়িতে না থাকায় পাশের বাড়ির দুই কিশোরী মেয়েকে নিয়ে রুমে টিভি দেখছিলেন তিনি। টিভি দেখা শেষে দুই কিশোরীকে রেখে পাশের রুমে ঘুমাতে যান।
শনিবার সকালে অন্য ঘরে শুয়ে থাকা কিশোরীরা উঠে বাহির থেকে ঘরের দরজা আটকানো দেখে। পরে পাশের বাড়ি থেকে তাদের মা এসে ঘরের দরজা খুলে দেখতে পান ওই ছাত্রীর মুখে কাপড় গোঁজা ও বিবস্ত্র মরদেহ বিছানায় পড়ে আছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
তিনি জানান, ওই ছাত্রীর গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
তবে গ্রেপ্তার দুজন পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, শুক্রবার ওই ছাত্রীর বাড়িতে তার বড় ভাই ও ভাবি না থাকার সুযোগে গভীর রাতে রনি ও জাহিদ বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে তার রুমে ঢোকে। এরপর তারা ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে বাধা দেয়ায় তারা ওই ছাত্রীকে ভয়-ভীতি দেখিয়েও ব্যর্থ হয়। পরে তারা ওই ছাত্রীর মুখে তার পড়নের পাজামা গুজে দেয় এবং শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
এসপি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে কিনা।’