ঈদের ছুটি শেষ। কাজে যোগ দিতে শুরু করেছে ঈদফেরত মানুষ। ফেরি ঘাটগুলো আবার আগের চেহারায় ফিরতে শুরু করেছে। যাত্রী চাপ কমেছে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। একই চিত্র মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটেও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার সকাল থেকেই যাত্রীবাহী পরিবহন কম আসায় লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের চাপ কমেছে। শেষ মুহূর্তে ফেরি সার্ভিসে যোগ হয়েছে একটি বড় টানা ফেরি। এতে প্রাইভেট কার, মাইক্রো ও হালকা যানবাহনের চাপ ঘাটে কমেছে।
তবে ঘাট কর্তৃপক্ষের দাবি, আজ বিকেল পর্যন্ত যাত্রী ও পরিবহন চাপ কিছুটা থাকবে। এরপর থেকে স্বাভাবিক হবে ঘাটের সার্ভিস।
রোববার সকালে সরেজমিনে বাংলাবাজার ঘাটে দেখা যায়, ঘাটের ৩ নম্বর লেনের দুই পাশে শতাধিক ছোট যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। ঘাট এলাকায় দুটি রো রো ফেরি রয়েছে। এতে অন্তত ৬০টি যানবাহন পার করা যাবে।
এরপরও বাড়তি হিসেবে যোগ হয়েছে একটি ডাম্ব ফেরি। এর ধারণক্ষমতা ছোট সাইজের অন্তত ৪০টি ফেরি। এতে করে রাতেই আটকে পড়া ব্যক্তিগত ও হালকা যানবাহন পার হতে পারবে বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে লঞ্চঘাটেও যাত্রী চাপ কমেছে। দূরপাল্লার পরিবহন কম আসায় ঘাটে যাত্রী তুলনামূলক কম দেখা গেছে। স্পিডবোট ঘাটেও নোঙর করা রয়েছে বেশ কয়েকটি যান। তাই স্বাভাবিক দেখা গেছে ঘাটের চিত্র।
পটুয়াখালী থেকে আসা প্রাইভেট কারচালক আমীনুদ্দিন বলেন, ‘নৌযানে ছোট যানবাহনের চাপ কমেছে। স্বাভাবিকভাবে পারাপার হচ্ছে সেগুলো। ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরতে পারছি, সেটাই শুকরিয়া।’
বাংলাবাজার টার্মিনালে থাকা পিকআপের সুপারভাইজার জানে আলম জানান, ‘বড় ফেরি আসার পর থেকেই যানবাহনের চাপ কমতে শুরু করেছে। এখন রাতভর অন্য যানবাহন চললে আর সমস্যা থাকবে না। আমাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। তারপরও পুলিশের সিরিয়াল বাণিজ্যের কারণে অনেক কষ্ট হয়েছে আমাদের। ভিআইপি পারাপারের কারণে আমাদের পেছনে পড়তে হয়েছিল।’
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন জানান, ‘ঈদ শেষে কর্মজীবী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পর্যাপ্ত পুলিশ ঘাটে মোতায়েন আছে। কোনো পুলিশের বিরুদ্ধে সিরিয়াল বাণিজ্যের অভিযোগ উঠলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের কঠোর বিচার করা হবে।
‘অনেক সময় ভিআইপিদের আগে পার করতে আমাদের বেগ পেতে হয়। সেটা ছাড়া কোনো অনিয়মের সঙ্গে আমরা জড়িত নই।’
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘শনিবার বিকেলের পর থেকে ঘাটে চাপ অনেকটাই কমে গেছে। ফেরিঘাটে আগের মতো যানবাহনও নেই। তবে যাত্রী আর পরিবহনের কথা চিন্তা করে দুপুরের পর থেকে ঘাটে ডাম্ব ফেরি ‘রায়পুরা’ যোগ করা হয়েছে।
‘এরপর রাতেই ঘাটে আটকে পড়া অনেক যানবাহন পার করা হয়েছে। আশা রাখি, বোরবার বিকেলের মধ্যেই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
এর আগে ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই কর্মজীবী মানুষের রাজধানীমুখী চাপ বাড়তে থাকে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। গত চার দিনই যাত্রীদের ঢল নামে ঘাটে। লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরি থেকে নেমে গন্তব্যের গাড়িতে ওঠেন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের যাত্রীরা।
এতে ঘাট এলাকায় যাত্রীদের তীব্র জট তৈরি হয়। এবারও ঘাটে মোটর বাইক লেনে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তীব্র গরম ও অসহনীয় যানজট আর মানুষের ঠাসাঠাসিতে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছিল বাংলাবাজার ঘাটে।