বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মের পেরিয়ে গেছে ১৬০ বছর। এ বছর কবির জন্মের ১৬১ বছর পূর্ণ হবে।
রোববার তার জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নের কাচারিবাড়ি।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৮৯১ সালের পর কবি বহুবার বজরায় চড়ে নাগর নদীর পারের এই কাচারিবাড়িতে এসেছেন। ১৮৯১ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত এখানে এসে লিখেছেন অসংখ্য গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, চিঠিপত্র, নাটিকা। ১৯৩৭ সালের ২৬ জুলাই বিশ্বকবি শেষবারের মতো এসেছিলেন এখানে।
সাবেক অধ্যক্ষ ও রবীন্দ্র গবেষক শরিফুল ইসলাম খান জানান, রবীন্দ্রনাথ নাগর নদী দেখেই আমাদের ছোট নদী কবিতাটি লিখেছিলেন।
প্রতি বছরই কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন হয় এই কাচারিবাড়িতে। তবে করোনাভাইরাস মহামারির নানা বিধিনিষেধের কারণে গত দুই বছর বন্ধ ছিল সব আয়োজন।
এবার রবিঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলা। এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
পতিসর কাচারিবাড়ির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা বরুণ কুমার চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জন্মবার্ষিকী উদযাপনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। কাচারি ধুয়ে-মুছে, রং করা হয়েছে। গত দুই বছর কোনো আয়োজন করা যায়নি। এবারের আয়োজনে অনেক মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছি।’
নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও রবীন্দ্র গবেষক অধ্যাপক শরীফুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নওগাঁর মানুষের গর্ব। কারণ তার নিজস্ব জমিদারি আত্রাইয়ের পতিসরে। রবীন্দ্রনাথ শিক্ষানুরাগী ছিলেন। তিনি তার ছেলের নামে রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউট খুলেছিলেন।
‘নওগাঁবাসীর দাবি, রবীন্দ্রনাথের নামে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। তার নামে যত জমি আছে সেই জমিতেই বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব। রবীন্দ্রনাথ নওগাঁর মানুষের হৃদয়ের মানুষ, কাছের মানুষ। তিনি তার নোবেল প্রাইজের অর্থ দিয়ে কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেছিলেন। ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা তিনিই চালু করেছিলেন।’
অধ্যাপক শরিফুল আরও বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ পতিসরে উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। অথচ এখানে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয় নাই। পতিসরে কৃষি চিন্তা ও পল্লি চিন্তাকে প্রাধান্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হোক। এটা নওগাঁর মানুষের গণদাবি।’
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান জানান, এ বছর রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উদযাপন আয়োজনের প্রতিপাদ্য ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’। কবির স্মৃতিবিজড়িত জায়গাকে সবার কাছে ছড়িয়ে দিতে, আরও জনপ্রিয় করে তুলতে স্থানীয়ভাবে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।