ভোজ্যতেলের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরে দাম কমাতে না পারলে এই সরকারের আর দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, দাম কমানো এবং ভোজ্যতেল নিয়ে কারসাজি সৃষ্টিকারী, সিন্ডিকেট ও মজুতদারদের শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বামপন্থি দলটি।
ঈদের আগে হঠাৎ করেই বাজারে তেলের সংকট দেখা দেয়। ক্রেতারা দোকান ঘুরেও পাচ্ছিলেন না সয়াবিন তেল। ঈদের পর গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে মিলমালিকদের বৈঠকের পর সয়াবিন ও পাম অয়েলের নতুন দাম নির্ধারণ করে সরকার।
নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ভোক্তাপর্যায়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৮ ও খোলা সয়াবিনের প্রতি লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি হবে।
এর আগে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিনের দর ছিল ১৬০ টাকা। খোলা তেল ছিল ১৩৬ টাকা লিটার।
অর্থাৎ আগের চেয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলে লিটারপ্রতি ৩৮ টাকা ও খোলা তেলে লিটারপ্রতি ৪৪ টাকা বেড়েছে।
পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৮৫ টাকা। আগে পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৭৬০ টাকা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি লিটার পাম অয়েল বিক্রি হবে ১৭২ টাকায়।
ভোজ্যতেলের এমন দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদেই ৬৪ জেলাতেই বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে সিপিবি।
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণের উপর শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সমাবেশে খাদ্যদ্রব্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি রুখতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিত্যপণ্যের মজুদ গড়ে তোলে রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকানের মধ্য দিয়ে তা বিক্রি করতে আহ্বান জানান বক্তারা।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যেসব পণ্য আমদানি করে সেগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে আমদানি করেন। মজুদ গড়ে তোলেন। ব্যবসায়ীরা ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি না করলে ন্যায্যমূল্যের দোকান খুলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিক্রি করেন। তারপরেও যদি তেলের দাম এই সরকার কমাতে না পারে তাহলে এই সরকারের আর দরকার নাই।’
সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘দাম বাড়ানোর আগে দুই পক্ষের সঙ্গে আলাপ করা হয়নি কেন? কম দামে বিক্রি করলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হবে এটা ব্যবসায়ীদের কাছে শুনল, কিন্তু যারা আমরা কিনে খাই, কত দামে কিনলে আমাদের পোষাবে তা কেন শোনা হলো না? সিন্ডিকেট আর ব্যবসায়ীদের স্বার্থে যে সরকার চলে সেটা সিন্ডিকেটের সরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন একটা সময়ে দাম বাড়ানো হলো যখন চিটাগাংয়ে তেলের জাহাজ নোঙ্গর করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, হয় ব্যবসায়ীদের পক্ষে থাকবেন নয়তো জনগণের পক্ষে থাকবেন।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ এন রাশেদা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, লাকী আক্তারসহ প্রমুখ৷
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট ঘুরে পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।