নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চরম ঝুঁকি নিয়ে আজকের দিনে দেশে ফিরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক/এগারোর সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষিত জরুরি অবস্থা চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে ২০০৭ সালের ৭ মে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজকের এই দিনে শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এক/এগারোর শুরুর দিকে কানের জরুরি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। এরপর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার দেশে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বঙ্গবন্ধু-কন্যা সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশে ফেরার ঘোষণা দেন।
শেখ হাসিনার এ ঘোষণা দেশ-বিদেশে ইতিবাচক সাড়া ফেলে। তার দেশে ফেরার পক্ষে জনমত গড়ে ওঠে। তার দৃঢ়তা, সাহস ও গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর চাপে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনের ইতিহাসে ৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূলনীতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে শেখ হাসিনা এদেশের রাজনীতিতে অবিকল্প নেতৃত্ব।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিষেধাজ্ঞা নাটকের অবসান শেষে শেখ হাসিনা ঢাকায় ফিরলে লাখো মানুষ তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানায়। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মিছিল শোভাযাত্রা সহকারে বঙ্গবন্ধু-কন্যা ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে আসেন।
দেশে ফিরে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। শুরু করেন নতুন সংগ্রাম। কিন্তু তার বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সাজানো মামলায় শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। ২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে কারান্তরীণ রাখা হয়।
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা শেষে ৪ ডিসেম্বর স্বদেশে ফিরে আসেন তিনি। গণতন্ত্রের জন্য তার সংগ্রাম চলতে থাকে। শেখ হাসিনার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ব্যাপক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। আন্দোলনের মুখে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় জোরপূর্বক রাষ্ট্র-ক্ষমতায় চেপে বসা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। সংকটের আবর্তে নিমজ্জিত দেশকে দূরদর্শী নেতৃত্বে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। তার উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রত্যয়ে আজ দিন বদলের অভিযাত্রায় উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে দেশ।