লালমনিরহাটের রাজপুর চর থেকে নারায়ণগঞ্জ যাবেন গার্মেন্টস শ্রমিক রফিকুর ইসলাম। স্ত্রী কন্যাসহ তিনজন। শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত রংপুরের মডার্ন মোড়ে বসে থাকলেও গাড়ি পাননি তিনি।
রফিকুরের কথা হলো- ৩ জন যাইতে আগে ভাড়া লাগত ১৫০০ টাকার মতো। এখন একজনই চাইছে ১১০০ টাকা।
এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই বলেই দীর্ঘ সময় ধরে বসে আছেন তিনি।
রফিকুর বলেন, ‘নারায়নগঞ্জ যামো তাও ওটে নামে দিবের নয়। নামাইবে গাজিপুর বা চান্দুরায়। এত টাকা দিয়ে কী যাওয়া যাইবে?’
মডার্ন মোড়ে গাড়ির জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে ছিলেন রংপুরের পালিচড়া এলাকার নীলা রানী। যাবেন সাভারের আশুলিয়ায়। তার কাছে ১২০০ টাকা করে। কিন্তু এত টাকা নেই তার কাছে।
নীলা বলেন, ‘ঈদের আগোত ২ জন ৮০০ দিয়ে আসছি। এ্যালা একজনের জন্যে ১২০০ চায়। কোনটে পামো এত টাকা?’
ঢাকায় ঢুকতে রংপুর অঞ্চলের প্রবেশদ্বার রংপুরের মডার্ন মোড়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকেও দেখা যায় এখানে শত শত অপেক্ষমাণ যাত্রী। গাড়ির চাপে দীর্ঘ জট লেগে আছে সড়কে। এতে ধীরে ধীরে এগোতে পারছে গাড়িগুলো। যাত্রীদের নিজেদের গাড়িতে তুলতে হাকডাক দিচ্ছেন চালকের সহকারীরা। তাদের সাফ জবাব, ঈদে যাত্রীর চাপ বেশি, তাই ভাড়াও বেশি।
কুড়িগ্রাম থেকে ফেরা হানিফ পরিবহনের সহকারী সোহরাব রোস্তম বলেন, ‘আমরা ১২০০ টাকায় ঢাকায় নিয়ে যাচ্চি। কম নাই। তাতেই তো সিট নাই। আমাদের গাড়ি তো নরমাল না। নরমার গাড়ির নরমাল ভাড়া।’
সাগর পরিবহণের সুপারভাইজার উজ্জল বলেন, ‘আগে ৪০০ নিতাম, এখন তো ঈদ। বুঝেন না.., এখন বাড়া নিতাছি ৮/৯০০ করে।’
এদিকে ভাড়া বেশি নিলেও প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি মডার্ন মোড় এলাকায়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মাহমুদউল্লাহ নামে এক যাত্রী বলেন, ‘দেশটা তো মগের মুল্লুক। যে যা চায় করতে পারে। ঢাকার ভাড়া ১২০০ হয় কী করে। এসব গাড়ি তো একটাও এসি না। নরমাল গাড়ির ভাড়া কী এত? প্রশাসন কী দেখে না?’
এ বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ভাড়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসন এবং ভোক্তা অধিকার বিভিাগ দেখে। আমরা আইনশৃঙ্খলা দেখি। আমরা তৎপর আছি। যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি।’
জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ঈদের ছুটিতে থাকায় এ বিষয়ে মত পাওয়া যায়নি।