ভারত মহাসাগরের উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছে; যা নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’তে রূপ নিতে পারে রোববার।
শুক্রবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ কী হবে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিম বাংলা হয়ে সাতক্ষীরা জেলায় আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘আন্দামান সাগরে রাতে লঘুচাপ তৈরি হয়েছে। এটি শনিবার রাতে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। রোববার এটি ঘূর্ণিঝড় আসানিতে পরিণত হতে পারে।
‘ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে এটি এগোতে থাকবে এবং ঘনীভূত হতে থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর জানা যাবে এটি কোন দিক দিয়ে এগোতে থাকবে। এখন এটি জানা যাবে না।’
আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর দু-এক জায়গায় দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
‘শনিবার সারা দিনে ও রাতে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পাবে।’
ঘূর্ণিঝড়ের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে পরবর্তী নির্দেশ পর্যবেক্ষণ করতে বলেছে অধিদপ্তর।
এর আগে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ নিয়ে কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিম বাংলা হয়ে সাতক্ষীরা জেলায় আঘাত হানতে পারে। এটি মোকাবিলায় এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
এবারের সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘আসানি’ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণ করা হয়।
ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপকূলীয় জনপদের জন্য আতঙ্কের নামান্তর। কয়েক বছর পর পরই সামুদ্রিক ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে এখানকার জনজীবন। ২০০৭ সালে উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিডর। এটি কেড়ে নেয় হাজার মানুষের প্রাণ। ওই ধাক্কা সামলে না উঠতেই ২০০৯ সালে আঘাত হানে আইলা। প্রাণহানিসহ মানুষের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষি, মৎস্যসহ অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসব দুর্যোগ মোকাবিলা করে উঠতে না উঠতেই ২০২০ সালে আবার আঘাত হানে আম্ফান।