বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আদালতে যাওয়া যাবে না বলে মুচলেকা নিল পুলিশ

  •    
  • ৬ মে, ২০২২ ২০:০১

প্রতিবেশীর সঙ্গে জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে ঈদের আগের দিন বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ও টিনের বেড়া ভেঙে ফেলা হচ্ছিল। ইকবাল হোসেন বেলাল ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চাইলে থানা থেকে পুলিশ আসে। তারা শিপন বণিকসহ পাঁচজনকে ধরে থানায় নিলেও পরে ছেড়ে দেয়। আর অভিযোগকারী বেলাল সাংবাদিক বা আদালতে যাবেন না, এমন মুচলেকা নেয় পুলিশ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ও টিনের বেড়া ভেঙে ফেলার সময় জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ কল করে বেকায়দায় পড়েছেন একজন।

স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের থানায় নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। উল্টো অভিযোগকারীকে চালান করার ভয় দেখিয়ে এ নিয়ে আদালত বা সাংবাদিকদের কাছে কিছু না জানানোর শর্ত দিয়ে মুচলেকা নেয়া হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে গত ২ মে সোমাবার। তবে সেটি জানাজানি হয় চার দিন পর।

জাতীয় জরুরি নম্বরে ফোন করেছিলেন উপজেলার পৌর এলাকার রাধানগর এলাকার প্রবাসী ইকবাল হোসেন বেলাল। আর তাকে থাকায় নিয়ে এই মুচলেকা আদায় করেন আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় সরকার।

বেলাল জানান, প্রতিবেশী শিপন চন্দ্র বণিকের সঙ্গে জায়গা নিয়ে তার বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে ঈদের আগের দিন তার বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ও টিনের বেড়া ভেঙে ফেলেন শিপন চন্দ্র বণিক।

সে সময় বেলাল ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চাইলে থানা থেকে পুলিশ আসে। তারা শিপন বণিকসহ পাঁচজনকে ধরে থানায় নিয়ে যায়।

পরে পুলিশ বেলালকেও থানায় ডাকে। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকেই চালান করার হুমকি দেয় বলে জানান বেলাল।

বেলাল বলেন, ‘৯৯৯-এ কল দেয়ার পর পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকেই ভাঙচুরকারীদের আটক করে নিয়ে যায়। পরে আটকদের শনাক্ত করার কথা বলে আমাকেও থানায় ডাকা হয়। সেখানে পরিদর্শক তদন্ত সঞ্জয় সরকার চালান করার ভয় দেখিয়ে মুচলেকা নেন।’

জায়গা নিয়ে বিরোধ স্থানীয়ভাবে সালিশ-বৈঠক করে মীমাংসা করা, সালিশের আগ পর্যন্ত আর কোনো দ্বন্দ্বে লিপ্ত না হওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনায় থানা, আদালত, সাংবাদিকদের বা কোনো সংস্থার কাছে অভিযোগ করতে পারবে না- এমন শর্ত দেয় হয় মুচলেকায়।

পরে শিপন চন্দ্র বণিকসহ পাঁচজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

শিপন চন্দ্র বণিক সাংবাদিকদের বলেন ‘কোনো পক্ষই সালিশের সিদ্ধান্তের বাইরে থানায়, আদালত, মিডিয়া বা অন্য কোনো সংস্থায় অভিযোগ করতে পারবে না মর্মে মুচলেকা নেয়া হয়। ওই সময় পরিদর্শক তদন্ত ছাড়া অন্য কোনো পুলিশ সদস্য ছিলেন না।

‘বিষয়টি এক দিনের মধ্যে মীমাংসা করার কথা ছিল। কিন্তু পৌরসভার মেয়র ওমরাহ পালনে সৌদি আরব থাকায় তিনি ফেরার পর আমাদের বিষয়টি নিয়ে সালিশ-বৈঠক হবে। ওই সালিশে আমি আমার বিরুদ্ধে আনা জায়গা দখলের অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরব।’

আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় সরকারকে নিউজবাংলা একাধিক ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাংবাদিক বা কারও কাছে অভিযোগ করতে পারবে না- এটিই অযৌক্তিক।’

তবে মুচলেকার ঘটনায় তাদের কিছু করার ছিল না বলেও মন্তব্য করেন এএসপি। বলেন, ‘তাদের আটক করে আনার পর স্থানীয় সাংবাদিকরাই এসে মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে মীমাংসা করবে মর্মে। এখানে আমাদেরই বা কী করার আছে?’ মুচলেকার ভাষা জানালে তিনি বলেন, ‘মুচলেকায় যদি এমন কোনো কিছু লেখা থাকে সেটি আমি জানি না। তবে মুচলেকায় এমন লেখা হওয়া উচিত না।’

মুচলেকায় কেন সই করলেন- জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন বেলাল বলেন, ‘পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় সরকার পক্ষপাত হয়ে এমন মুচলেকা তৈরি করেছেন। তা ছাড়া পরের দিন ছিল ঈদ। পুলিশ স্থানীয় গণ্যমান্য ও সাংবাদিকদের চাপে একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত না নিতে পেরে স্বাক্ষর করে ফেলেছি। তবে সেটি ছিল ২৪ ঘণ্টার জন্য।’

এ বিভাগের আরো খবর