চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় এলাকা থেকে হাটহাজারী রোডের ৩০০ মিটার উত্তরে গেলেই রাস্তার পূর্ব পাশে ওয়াপদা ব্যাপারীপাড়া সড়ক। এই সড়ক ধরে দুই মিনিট এগিয়ে গেলেই সড়কের ওপর দেখা মেলে ৩৩ হাজার ভোল্টের চার পায়ে দাঁড়ানো বৈদ্যুতিক খুঁটির।
এই খুঁটির নিচ দিয়েই সাধারণ মানুষের চলাচল। মানুষ যাতায়াত করতে পারলেও খুঁটির নিচ দিয়ে যেতে পারে না যানবাহন। এমনকি মাস তিনেক আগে ওই এলাকায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও প্রবেশ করতে পারেনি ঘটনাস্থলে।
সড়কের মধ্যখানে এমন বিদ্যুতের খুঁটি লাগলেও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয়রা এই খুঁটি সরাতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে একাধিকবার আবেদন করেও সমাধান পাননি।
শুক্রবার সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) ষোলশহর সাবস্টেশনের পাশের সড়কে অবস্থান এই বৈদ্যুতিক খুঁটির। এর নিচ দিয়ে চলে গেছে প্রায় ১০ ফুট প্রস্থের সড়ক।
খুঁটির গোড়ায় লম্বালম্বি ত্রিভুজ আকৃতির লোহার পাত। দুপাশ দিয়ে মানুষ, মোটরসাইকেল, রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা পার হতে পারলেও অন্য যানবাহন আটকে যায়। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগের শিকার ব্যাপারীপাড়া এলাকার সাধারণ মানুষ।
ওই এলাকার ব্যবসায়ী মনির উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ এলাকায় আমরা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি। সড়কের ওপর এভাবে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এলাকায় কেউ অসুস্থ হলে একটা অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত ঢুকতে পারে না। এমনকি দুর্ঘটনাবশত আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসও ঢুকতে পারে না।
‘মাস তিনেক আগে এখানে একটি সেমিপাকা ঘরে আগুন লেগেছিল, ফায়ার সার্ভিস এলেও এই খুঁটির কারণে ঢুকতে পারেনি৷ পরে বহু কষ্টে এলাকার লোকজন মিলে আগুন নিভিয়েছে।’
নেজাম উদ্দিন নামে আরেক ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১০-১৫ বছর ধরে এই এলাকায় আছি। তখন থেকেই দেখছি রাস্তার ওপর এই খুঁটি। কেউ এটা সরানোর ব্যবস্থা করছে না। এই খুঁটির কারণে বেশ কষ্টে আছি আমরা।
‘দোকানের জন্য মালবাহী কোনো গাড়ি খুঁটির জন্য আসতে পারে না। এমনকি ঘরের নির্মাণসামগ্রী আনার ক্ষেত্রে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়।’
পুরো সড়কের ওপর দীর্ঘদিন কীভাবে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়ে গেল- সে বিষয়ে জানতে চাইলে পিডিবি চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, ‘আমাদের তো সাধারণত এমন বড় খুঁটি নেই। আর থাকলেও খুবই কম। এ রকম খুঁটি থাকে সাধারণত পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি)। তবু আমরা ওই এলাকাটি পরিদর্শন করে তারপর জানাব আসলে বিষয়টি কী।’
এ বিষয়ে পিজিসিবির এসপিএমডি শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘এই খুঁটি আমাদের হওয়ার সম্ভাবনা নেই, পিডিবির হতে পারে। তবে আমাদের হলেও এই মেইন্টেইন্যান্স দেখে জিএমডি শাখা।’
পিজিসিবি চট্টগ্রামের জিএমডি শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর মোর্শেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।