কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত রেলের একদল কর্মী ও তাদের স্বজনদের বিরুদ্ধে টিকিট বুকিং সহকারী ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যাদের তিনজন রেলকর্মী এবং বাকি দুজন তাদের স্বজন।
রেলের কর্মীরা জানিয়েছেন, হামলার ঘটনাটি ঘটে ঈদের দিন মঙ্গলবার বিকেলে। আর মামলা হয় তার পরদিন।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক ছোটন শর্মার দায়েরকৃত মামলায় আসামি করা হয়েছে সুরাইয়া আক্তার বিউটি, তার স্বামী মো. শাহীন, বোন হ্যাপি আক্তার, তার স্বামী ভুট্টু মিয়া ও বিউটির ছেলে রাফিকে।
বিউটি কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের আয়া, হ্যাপি গেটম্যান, ভুট্টু চট্টগ্রাম রেলওয়েতে কর্মরত।
তারা সবাই সদর উপজেলার বগাদিয়া এলাকার বাসিন্দা। থাকেন রেলওয়ে কোয়ার্টারে।
অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এরা দীর্ঘদিন ধরে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়টি সবাই জানে। তবে এদের কাছে পুরো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জিম্মি।’
কিশোরগঞ্জের রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ইউসুফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের দিন বিকেলে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিকে কেন্দ্র করে আসামিরা কাউন্টারে ঢুকে বুকিং সহকারী রফিককে মারধর করে চলে যায়। পরে বাইরে গিয়ে পুলিশের ওপর আবার হামলা করে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রেলওয়ের পক্ষ থেকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, ‘ঘটনার দিন স্টেশনে যাত্রীদের প্রচুর ভিড় জমে। এতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছিল। এ সময় কাউন্টারের সামনে চিৎকারের শব্দ শুনে পুলিশ এগিয়ে গেলে আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
‘পুলিশও তাদের পিছু নিয়ে ব্যর্থ হয়ে আবারও কাউন্টারের সামনে চলে আসে। আধা ঘণ্টা পর আসামিরা আবার সংঘবদ্ধভাবে কাউন্টারের সামনে এসে লাইনে না দাড়িয়ে টিকেট নেয়ার চেষ্টা করে। সেখানে দায়িত্বে থাকা এসআই ছোটন তাদেরকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট নিতে বললে তারা তার গলায় ধাক্কা মারে। পরে শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করে তাকে কিল-ঘুষি মারে।
‘এ ঘটনার পরদিন হামলার শিকার পুলিশ কর্মকর্তা থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’