বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশকে এক বছরে ১০ ধাপ অবনমন করে ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের (আরএসএফ) প্রতিবেদনটিকে বিদ্বেষপ্রসূত, আপত্তিকর বলেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘এই প্রতিবেদন অগ্রহণযোগ্য। এটি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি।’
চট্টগ্রামের বাসভবনে বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে এক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার ২০২২ সালের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক প্রকাশ করে আরএসএফ। সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬২তম। গত বছর যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫২তম।
আরএসএফ সব সময় বাংলাদেশের প্রতি ‘বিদ্বেষপ্রসূত’ অভিযোগ করে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা গত বছর এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে প্রচণ্ড আপত্তিকর মন্তব্য ছিল।
‘আইনি নোটিশে বলা ছিল, তারা কোনো দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের ব্যাপারে এ রকম মন্তব্য করতে পারে না। ফ্রান্সের আইনেই সেটি বলা আছে, অর্থাৎ তারা ফ্রান্সের আইন লঙ্ঘন করে সেটা করেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে সেই সব সূত্র থেকে আরএসএফ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। নিজেরাও বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে যে রিপোর্ট দেয়, সেটির কোনো মূল্য নেই।‘সেই একই সংগঠন যখন আবারও বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়ে কথা বলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিতে হবে তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।’
ডিজিটাল বা সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়েও আরএসএফ কথা বলেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডিজিটাল বিষয়টি যখন ছিল না, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টিও ছিল না। যখন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল বিষয়টি এসেছে, তখন গণমানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ আইন করেছে।
‘পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই আইন হয়েছে এবং হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে, বাংলাদেশেও হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই আইনের সুযোগ গ্রহণ করে অনেক সাংবাদিকও তাদের মানহানিকর বিষয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সাংবাদিক হোক, সাধারণ মানুষ হোক, কারও বিরুদ্ধে এই আইনের অপব্যবহার হওয়া উচিত নয়, সে নিয়ে আমরা সতর্ক আছি।
‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে বাংলাদেশে যেসব ধারার ব্যাপারে অনেক আলোচনা হয়, কেউ কেউ সমালোচনাও করেন; অথচ ভারত, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে যে আইনগুলো হয়েছে, সেখানেও অনুরূপ ধারাগুলো সন্নিবেশিত আছে।’
বিভিন্ন দেশের আইনের উদাহরণ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফ্রেমওয়ার্ক ল করছে, যেটার অধীনে বিভিন্ন দেশে পদক্ষেপ নেয়া হবে, আইন করা হবে। ফ্রান্সেও একই ধরনের আইন আছে। সুতরাং আরএসএফ আগে থেকেই যেহেতু বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত, সে জন্যই তারা সূচকে কয়েক ধাপ নামিয়ে দিয়েছে। আমরা এটি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি।’