দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পুরান ঢাকার সংসদ সদস্য হাজি সেলিম আইন মেনেই দেশের বাইরে গিয়েছিলেন। তিনি আইন মেনেই আবার দেশে ফিরে এসেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
দণ্ডের পরও হাজি সেলিম কীভাবে বিদেশ গেলেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি ইমার্জেন্সি চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক গিয়েছিলেন, আবার ফিরেও এসেছেন। আইনগতভাবে যতটুকু প্রশ্ন আসে, হাইকোর্ট থেকে তার যে ইটা (রায়) করেছিলেন, সেগুলো তিনি সামনে রেখে গিয়েছেন।
‘তিনি একজন সংসদ সদস্য, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনকে মাথায় রেখেই তিনি গিয়েছেন। আমি প্রশ্নের জবাব এভাবে দিচ্ছি, উনি আইন মেনেই গিয়েছেন, আবার আইন মেনেই ফিরে এসেছেন।’
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: নিউজবাংলা
হাজি সেলিম এভাবে যেতে পারেন কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন হাইকোর্টের একটি ভারডিক্ট (রায়) হলে অফিশিয়ালি রায় চলে আসে। ভারডিক্ট হয়েছে কিন্তু অফিসিয়ালি সেটা ইমপ্লিমেন্ট হওয়ার আগেই তিনি গিয়েছেন। আবার ফিরেও এসেছেন।’
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে শনিবার সন্ধ্যায় দেশ ছাড়েন হাজি সেলিম। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
এই মামলায় ঈদের পর তার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের কথা। এরই মধ্যে তার দেশের বাইরে যাওয়া নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এতে দাবি করা হয়, দণ্ড মাথায় নিয়ে আওয়ামী লীগের এই এমপি ‘দেশ ছেড়েছেন’।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশে ফেরেন হাজি সেলিম। এর পরই লালবাগে নিজের নির্বাচনি এলাকার এক বাসিন্দার জানাজায় তিনি অংশ নেন।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিচারিক আদালত হাজি সেলিমকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২০ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ তার ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই রায় প্রকাশ হয়। এতে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
গত ৯ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে হাইকোর্ট।
‘কর্মসূচি বাস্তবসম্মত না হলে আন্দোলন সফল হয় না’
ঈদের পরে বিএনপি কঠোর আন্দোলনের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি রাজনৈতিক দল। নানান ধরনের কৌশল তারা অবলম্বন করবে জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য। তারা যেসব কর্মসূচি দিচ্ছেন, সবগুলোই জনস্বার্থের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
‘যেটা বলতে চাই, দল হিসেবে অনেকেই অনেক কথা বলে থাকেন, কিন্তু সেটা যদি বাস্তবসম্মত না হয়, জনগণ যদি গ্রহণ না করে, তাহলে আন্দোলন বলুন আর যাই বলুন, এগুলো সফল হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নৈরাজ্যের প্রশ্নে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তো আছেই। নৈরাজ্য হলে তাদের ওপর যে অর্পিত দায়িত্ব, সেটা তারা পালন করবেন।
‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সজাগ আছেন। যারাই নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে কিংবা ভাঙচুর করবে, তাদের বিরুদ্ধেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’