বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখাতে নওগাঁয় চালু ট্যুরিস্ট বাস

  •    
  • ৪ মে, ২০২২ ১৬:৫৭

জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, ‘নওগাঁর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোকে দেশসহ বিশ্বের পর্যটকদের কাছে নতুন করে তুলে ধরতেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রথম ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।’

ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে অর্ধশতাধিক ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা।

মহামারি করোনার কারণে দুই বছর অধিকাংশ সময় বন্ধ ছিল জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নওগাঁর উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থানগুলোয় দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় ছিল।

নওগাঁর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান, হলুদ বিহার, জগদ্দল বিহারে এখন দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

এদিকে নওগাঁ জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সহায়তায় এই প্রথম ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুধবার সকাল ৯টা থেকে চারটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের স্থানে ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে জনপ্রতি ৪৫০ টাকা।

এর মধ্যে আগামী তিন দিনের টিকিট বিক্রি হয়েছে। এসব বাস সার্ভিস আগামী সাত দিন নিয়মিত চলবে। তার পর থেকে প্রতি সপ্তাহে এক দিন করে চলাচল করবে দর্শনার্থী নিয়ে।

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন শহরের জনকল্যাণ মহল্লার বাসিন্দা মৌসুমি সুলতানা।

তিনি বলেন, ‘এই ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস চালু করায় আমরা খুবই আনন্দিত। কারণ এক দিনে ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান, হলুদ বিহার এবং জগদ্দল বিহার এই চারটি স্থান দেখার সুযোগ পাচ্ছি। জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে দর্শনার্থীর ভিড়। ছবি: নিউজবাংলা

জেলার ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানেও বেড়েছে দর্শনার্থীদের আনাগোনা। প্রিয়জনদের নিয়ে উপভোগ করতে দেখা গেছে আলতাদীঘির সৌন্দর্য।

কথা হয় নওগাঁ শহরের আলুপট্টি এলাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা সামিউল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চাকরিসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে পরিবারকে সেভাবে সময় দিতে পারি না। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ছুটি পেয়েছি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

‘এক দিনে চারটি স্থানে ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছি। প্রতিজনের জন্য প্যাকেজ মাত্র ৪৫০ টাকা। আমার সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তান এসেছে। সব মিলিয়ে খুব উপভোগ করছি।’

বদলগাছী উপজেলার হলুদ বিহারে ঘুরতে আসা আব্দুল বারেক বলেন, ‘আমাদের নওগাঁ জেলা ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর। এ জেলায় অসংখ্য ইতিহাসবিজড়িত স্থান ও স্থাপনা রয়েছে। যদি সবগুলো স্থানে আগামীতে ভ্রমণের জন্য প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা করে, তবে খুবই ভালো হয়।’

ধামইরহাট উপজেলার জগদ্দল বিহারে ঘুরতে আসা জুথী আক্তার বলেন, ‘জেলা প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে তা খুবই ভালো দিক বলে মনে করি। আমরা পরিবারের আটজন সদস্য ঘুরতে এসেছি।

‘জেলার ঐতিহাসিক কুসম্বা মসজিদ, আত্রাইয়ের পতিসরে রবিঠাকুরের কাচারিবাড়ি, বলিহার রাজবাড়ী, দুবলহাটি রাজবাড়ীসহ আরও যেসব ঐতিহাসিক স্থান আছে সেগুলোতেও ভ্রমণের জন্য এমন সহজলভ্য বাস সার্ভিস সারা বছরই চালু রাখা হোক- এমনটাই আশা করছি। পাশাপাশি নিরাপত্তাব্যবস্থা যেন জোরদার করা হয়।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ নওগাঁ জোনের ইনচার্জ সাজেদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে ঈদুল ফিতরের ছুটির কারণে অনেক দর্শনার্থীর উপস্থিতি বেড়েছে। এখানে ১৫ জন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটর করছি, যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।’

পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলোয় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া পুলিশের একাধিক মোবাইল টিমও কাজ করছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশ বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে।’

জগদ্দল বিহার। ছবি: নিউজবাংলা

জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, ‘নওগাঁর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোকে দেশসহ বিশ্বের পর্যটকদের কাছে নতুন করে তুলে ধরতেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

‘এই প্রথম ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। শহরের মুক্তির মোড় থেকে সকাল ৯টায় যাত্রা শুরু করছে। মুক্তির মোড়ের পদ্মা বাস কাউন্টার থেকে এ প্যাকেজের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি বাস যুক্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ প্যাকেজের মাধ্যমে একজন পর্যটক খুব সহজেই প্রথমে ভারত সীমান্তঘেঁষা জাতীয় উদ্যান শালবন বিহারের আলতাদীঘি, ঐতিহাসিক জগদ্দল বিহার, ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার এবং হলুদ বিহার দর্শন করতে পারছেন। এ ছাড়া প্যাকেজের মাধ্যমে ভ্রমণরত পর্যটকরা সকাল ও বিকেলের নাশতা এবং দুপুরের খাবার পাচ্ছেন।

‘আগামীতে আমরা চেষ্টা করব জেলার আরও যেসব ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে সেগুলোতেও ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস চালু করার।’

এ বিভাগের আরো খবর