কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর গ্রামে সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় মধ্যরাতের পর মামলা দুটি করা হয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি জানান, সংঘর্ষে নিহত মতিয়ার মণ্ডলের ভাই আশরাফুলের করা মামলায় ঝাউদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান কেরামত আলীকে প্রধান আসামি করা হয়ছে। এ মামলায় মোট আসামি ৬৭ জন। আর নিহত রহিম মালিথার ছেলে রফিকুল ইউপি মেম্বার আনিস মণ্ডলকে প্রধান আসামি করে ২৭ জনের নামে মামলা করেছেন।
দুই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করেননি ওসি। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ জনকে আটক করা হয়েছিল।
সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে নেমেছে সিআইডি, ডিবি পুলিশ ও র্যাব। ওসি জানান, গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য আস্তানগর গ্রাম।
ঘটনার সূত্রপাত
কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর গ্রামে চারা বটতলার মোড় দখলে রাখা নিয়ে সোমবার সংঘর্ষ হয়। ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামতের লোকজন গ্রাম্য বাজার এই চারা বটতলার দখল ধরে রেখেছেন। প্রতিপক্ষ বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসানের লোকজন সেখানে যাওয়া নিয়ে বিকেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
ইফতারের কিছুটা আগে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হলে চারজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন লালটু, কাশেম, রহিম ও মতিয়ার। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আটজন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মেহেদী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের চারা বটতলার মোড় দখলে রেখেছেন কেরামত আলীর লোকজন। সেখানে তার লোকজনকে যেতে দেয়া হয় না। গ্রামের সাবেক মেম্বার ফজলু ও তার ভাতিজা বর্তমান মেম্বার আনিস চেয়ারম্যান মেহেদীর লোক। তারা কয়েকজন চারা বটতলায় গেলে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।
‘একপর্যায়ে বিকেলে ও সন্ধ্যায় সংঘর্ষ হয়। এতে বর্তমান চেয়ারম্যান মেহেদীর পক্ষের তিনজন ও সাবেক চেয়ারম্যান কেরামতের পক্ষের একজন নিহত হন।’
সাবেক চেয়ারম্যান কেরামত আলী বলেন, ‘গ্রামের কোনো জায়গা আলাদা করে কারও দখলে নেই। আধিপত্য নিয়ে যেটুকু বিরোধ আছে তা মিটিয়ে ফেলার জন্য মেহেদীকে বলেছি, কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।
‘সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার সমর্থিত রহিম উজানগ্রাম বাজারহাট থেকে এসে চারা বটতলায় নামলে ফজলু ও আনিসের লোকজন মারধর করে। হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে- এমন খবরে লোকজন জড়ো হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।’
এর জন্য তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান মেহেদীকে দায়ী করেন।