বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেতুতে বাড়ি তুলে বসবাস

  •    
  • ৩ মে, ২০২২ ১৭:৩৭

যানবাহন বা পথচারী চলাচলের অযোগ্য হলেও চার বছর ধরে সেতুটির ভিন্ন রকম ব্যবহার করছেন স্থানীয় একটি জলমহাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কয়েক ব্যক্তি। তারা সেতুর পাটাতনের (মেঝের) দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে রীতিমতো টিনশেড ঘর বানিয়ে বসেছেন। আর তা থেকে পরিচালনা করছেন জলমহাল ব্যবসা।

রাস্তার সেতু নির্মাণ করা হয় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের জন্য। কিন্তু নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলায় একটি সেতুতে যান চলাচল বা পথচারী চলাচল বন্ধ। সেতুর ওপর রীতিমতো টিনের ঘর বানিয়ে বসেছেন স্থানীয় কয়েকজন। আর তা থেকে পরিচালনা করছেন জলমহাল ব্যবসা।

সেতুটির অবস্থান খালিয়াজুরী উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে। ছয় বছর আগে এটি নির্মাণ করা হয়।

চাকুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা সেতুটি এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না।’

খালিয়াজুরী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব আহমেদ জানান, লেপশিয়া বাজার থেকে জগন্নাথপুর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার ডুবোসড়ক রয়েছে। ওই সড়কের ফরিদপুর এলাকার খালের ওপর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পাকা সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের তদারকিতে ৩৮ ফুট লম্বা সেতুটি নির্মাণ করতে তখন ব্যয় হয় ৩০ লাখ ৮৯ লাখ টাকা।

কিন্তু সেতু নির্মাণের পর এর দুপাশে কোনো সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ রোড) নির্মাণ করা হয়নি। এ কারণে কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি। এলাকাবাসীর যাতায়াত করতে হচ্ছে বিকল্প রাস্তা দিয়ে।

যানবাহন বা পথচারী চলাচলের অযোগ্য হলেও চার বছর ধরে সেতুটির ভিন্ন রকম ব্যবহার করছেন স্থানীয় একটি জলমহাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কয়েক ব্যক্তি। তারা সেতুর পাটাতনের (মেঝের) দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে রীতিমতো টিনশেড ঘর বানিয়ে বসেছেন। আর তা থেকে পরিচালনা করছেন জলমহাল ব্যবসা।

জলমহালটি ফরিদপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি নামে একটি সংগঠনের নামে ইজারা বন্দোবস্ত নেয়া। তবে এ সংগঠনের নেপথ্যে কয়েক প্রভাবশালীও জড়িত। ওই জলমহালের শ্রমিকরাই চার বছর ধরে ঘরটিতে অবস্থান করছেন। চৌকি পেতে এখানে তারা রাত্রিযাপন করেন। রান্না বা খাওয়া-দাওয়া করেন। জলমহাল পাহারা দেন। শুষ্ক মৌসুমে শুকনো মাছ রাখেন। আবার ধানের মৌসুমে মজুত করেন ধান। সোমবার ঘরটিতে গিয়ে বেশ কিছু ধানের বস্তা দেখা গেছে।

আর পূর্ব দিকে সেতুর নিচ দিয়ে চলছে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, গরুর গাড়ি ছাড়াও অসংখ্য পথচারী। তাদের মধ্যে ফতুয়া গ্রামের জাকির হোসেন, মাজহারুল ইসলাম ও ফরিদপুরের হানু মিয়া বলেন, ‘এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় এমপি রেবেকা মমিন এ সেতুটি বরাদ্দ করেছিলেন। কিন্তু শুধু সংযোগ সড়কের অভাবে জনগণ এর কোনো সুফল পাচ্ছে না।’

আতিক মিয়া নামে অন্য এক ব্যক্তি বলেন, ‘সরকার সেতু নির্মাণের জন্য ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিতে পারলে সংযোগ সড়কের জন্যও ১-২ লাখ বরাদ্দ দিতে পারবে। কিন্তু এখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে। তারা এটি নিয়ে ভাবেনই না।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফরিদপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আবু সিদ্দিক ও সদস্য মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘এখানে ঘর তোলার মতো উঁচু জায়গা কম। সেতুটি অব্যবহৃত থাকায় এর ওপর ঘর বানিয়ে ব্যবহার করছি। তবে সেতুটি চলাচলের যোগ্য করে তুললে সঙ্গে সঙ্গে ঘর সরিয়ে নেব।’

চাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সেতুটির দুপাশে সংযোগ সড়কের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। তারা করবেন বলেছেন।’

তিনি বলেন, ‘সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে এ রাস্তা দিয়ে সহজে ইজিবাইক, সিএনজিসহ ছোটখাটো যানবাহন চলতে পারবে। এতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমবে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাজিব আহমেদ বলেন, ‘সামনে বর্ষাকাল। তখন রাস্তাটি ডুবে যাবে। তাই আপাতত সেখানে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তবে আগামী শুষ্ক মৌসুমে অবশ্যই সেখানে সংযোগ সড়ক তৈরি করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সেতুটির নিচে দিয়ে একটি বাইপাস সড়ক আছে। তাই পথচারীসহ ছোটখাটো যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে না।’

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে আছে। শিগগিরই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর