ঈদ আনন্দ মুছে গিয়ে হঠাৎ করেই শোকের সাগরে জনু মিয়া।
তার ১০ বছরের শিশুসন্তান বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিল বিআইডব্লিউটিএর শ্যামপুর ইকোপার্কে। চড়েছিল রোলার কোস্টারে। কিন্তু উঁচু থেকে ছিটকে পড়ে মারা গেছে সে।
মঙ্গলবার ঈদের দুপুরের আগে এই দুর্ঘটনা ঘটলে পুরো পার্কে নেমে আসে শোকের ছায়া।
শিশুটির নাম রাব্বি হোসেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক বেলা সোয়া ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনরা জানান, রাব্বিরা চার বন্ধু মিলে গেন্ডারিয়ার বাসা থেকে ইকোপার্কে বেড়াতে যায়। রাব্বিই তাদের রোলার কোস্টারে ওঠার প্রস্তাব করে। অন্য বন্ধুরা রাজি না হওয়ার পর রাব্বি নিজেই ওঠে।
চলন্ত অবস্থায় শিশুটি ছিটকে নিচে পড়ে যায়। তখন তার বন্ধু ও পার্কের কর্মীরা গিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাব্বির মায়ের আর্তনাদ
রাব্বির বাবা জনু মিয়া বলেন, ‘আজ সকালে আমরা সবাই বাসায় ছিলাম। আমার ছেলে কোন ফাঁকে বাসা থেকে বের হয়ে তিন-চারজন মিলে শ্যামপুর ইকোপার্কে যায়। রোলার কোস্টার থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকা মেডিক্যালে এসে ছেলের লাশ দেখতে পাই।’
এই দুর্ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই জানিয়ে রাব্বির বাবা বলেন, ‘আমার একটাই দাবি, ছেলের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই বাসায় নিয়ে যাব।’
রাব্বিদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদীখান থানার বসাইল গ্রামে। তারা বাবা গেন্ডারিয়া কাঠবাগিচা এলাকায় একটি বাসায় থাকেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই আব্দুল খান বলেন, বিষয়টি থানাকে জানানো হয়েছে।
দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটল, সে বিষয়ে ইকোপার্কের বক্তব্য তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি। পার্কটির ফেসবুক পেজে যে নম্বর দেয়া আছে, সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
পার্কটি রাজধানীর কদমতলী থানায় পড়েছে। এই শ্যামপুর থানার উপপরিদর্শক বিপ্লব বাড়ইও বলতে পারেননি দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পার্কের কেউ আমাদের কাছে আসেনি। আর মরদেহ এখনও ঢাকা মেডিক্যালেই আছে। আমাদের এক পুলিশ সদস্য আছেন সেখানে। তিনি এখনও বিস্তারিত জানাননি।’