বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদের দিনেও তারা রাস্তায়

  •    
  • ৩ মে, ২০২২ ১৩:৫৭

পুরো এক মাস রোজা শেষে সবাই যখন ঘরে ফিরতে ব্যস্ত, তখনও রাস্তায় থাকতে হয় তাদের। ইফতার করতে হয় রাস্তায় দাঁড়িয়েই। ঈদের দিনও সময় যায় একইভাবে। এক ঈদে দায়িত্ব পালন করলে আরেক ঈদে ছুটি কাটানোর সুযোগ মেলে।

ঈদ মানে আনন্দ, খুশি, ঈদ মানে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোর শুভক্ষণ। কিন্তু জনগণের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অনেককে এই উৎসব উদযাপন করতে হয় সড়কে দাঁড়িয়েই।

পুরো এক মাস রোজা শেষে সবাই যখন ঘরে ফিরতে ব্যস্ত, তখনও রাস্তায় থাকতে হয় তাদের। ইফতার করতে হয় রাস্তায় দাঁড়িয়েই। ঈদের দিনও সময় যায় একইভাবে। এক ঈদে দায়িত্ব পালন করলে আরেক ঈদে ছুটি কাটানোর সুযোগ মেলে।

তারা বলছেন, সবাই একসঙ্গে ছুটিতে গেলে মানুষের নিরাপত্তা দেবে কে? খারাপ লাগলেও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তাদেরই।

ঈদের দিন মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পরিবার পরিজন ছেড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন করছেন পুলিশ সদস্যরা।

রাজধানীর পান্থপথ সিগন্যালে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক কনস্টেবল আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘৩০ বছর চাকরিতে, কোনো রমজানের ঈদ বাড়িতে করতে পারি নাই। ছুটি পাওয়া যায় না। একসময় খারাপ লাগত। এখন আর তেমন খারাপ লাগে না।

‘রাস্তায় দাঁড়িয়েই ইফতার করেছি অনেক দিন। আজকে সকাল থেকে ডিউটি, রাস্তায় আছি। মাঝে পাশের মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে এসেছি।’

কাজেই ঈদ আনন্দ খুঁজছেন পুলিশের এই সদস্য। বলেন, ‘আমি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করি। সবাই ছুটিতে গেলে রাস্তায় আর গাড়ি চলতে পারবে না। কারও না কারও থাকা লাগবেই।

‘আমার মতো অসংখ্য মানুষ দায়িত্বের খাতিরে পরিবার ছাড়া ঈদ করে। আমিও তাই করছি। অন্যদের কথা ভাবলে কষ্ট কমে আসে। আর অনেক বছরে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।’

কনস্টেবল আবু বকর সিদ্দিকের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। দুই ছেলে, স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা গ্রামেই থাকেন। তিনি রাজধানীর চকবাজারে মেসে থাকেন। ঈদের দিন সকালে সেমাই, খিচুরি আর ডিম ভাাজি খেয়ে সকালে ডিউটি এসেছেন সিদ্দিক।

কারওয়ান বাজার সিগন্যালে কথা হয় ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মো. মোস্তফার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাকরিটাই এমন। শুরুতে মানিয়ে নিতে সমস্যা হতো, পরিবারের সদস্যরাও বুঝতে চাইত না। এখন সব সয়ে গেছে। মন খারাপ হলেও কিছু করার নেই। দায়িত্বের খাতিরে সব মেনে নিতে হয়।’

মোস্তফা বলেন, ‘এই রমজানে যারা সকালে ডিউটি করেছে, তাদেরকে ফজরের নামাজ পড়েই বের হয়ে আসতে হয়েছে। ফিরেছে দুইটার পর। আর দুপুরের ডিউটিতে যারা আসে তাদের রাত ১০টা পর্যন্ত। ফলে ডিউটি থাকলে রাস্তাতেই ইফতার করতে হয়।

‘বক্সে ইফতারের আয়োজন হয়। কিন্তু সবাই একসঙ্গে ইফতার করা যায় না। কারণ রাস্তায় কাউকে না কাউকে থাকতে হয়। ঈদেও একই অবস্থা। আমি ডিউটি করছি, অন্য আরেকজন নামাজ পড়ে আসছে। উনি আসার পর আমি যাই।’

হাতিরঝিলে দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে ঈদ বা আনন্দের সময় কাটাতে সবারই ভালো লাগে। একান্ত বাধ্য না হলে কেউ দূরে থাকতে চায় না। আমরাও চাই না। কিন্তু ছুটি না পেলে তো যাওয়া সম্ভব না। আর একসঙ্গে সবাই ছুটিও পাবে না।

‘কাউকে না কাউকে আমার মতো ডিউটি করতে হয়। আমি ডিউটি করছি বলে আরেকজন ছুটি কাটাতে পারছে। পরেরবার হয়তো আমি ছুটিতে যেতে পারব। এভাবে আমাদের চলতে হয়।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ) ফারুক হোসেন বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হয়। ফাঁকা নগরীর বাড়তি নিরাপত্তার জন্য আমাদের ৫০০টি মোবাইল টিম আছে।

‘ঈদ আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে আমরা তৎপর আছি। পুলিশ মাঠে আছে বলে সাধারণ জনগণ নিরাপদে ঈদ করতে পারছে। এতেই আমাদের আনন্দ।’

এ বিভাগের আরো খবর