রাজধানীর বাড্ডায় স্ত্রীকে অ্যাসিড ছোড়ার মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্বামী শাহ আলম। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিপন আলী এসব নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার পর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
‘দগ্ধ ওই নারী সকালে হাসপাতাল থেকে চলে গিয়েছিল। পরে আমরা তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি।’
ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের ওয়ার্ড মাস্টার বাবুল বলেন, ‘সোমবার সকালে তিনি (রেখা) অনেকটা জোর করে হাসপাতাল থেকে চলে যান। উনার সারা শরীরে ব্যান্ডেজ ছিল। পরে পুলিশ তাকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগে ভর্তি করায়।’
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, ‘রোগীকে এখনও দেখতে পারিনি। উনার ফাইলটা দেখেছি। শরীরের ৮ শতাংশ ঝলসে গেছে। পরে বিস্তারিত বলতে পারব।’
বাড্ডার এলাকার মিশ্রি টোলার একতা আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে রোববার সন্ধ্যায় অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ নারীর নাম রেখা আক্তার। তিনি স্বামী শাহ আলমের সঙ্গে ওই এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। শাহ আলম গুলশানের একটি স্বর্ণের দোকানে কাজ করেন।
অ্যাসিডে রেখা আক্তারের শরীরের ৮ শতাংশ ঝলসে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। ছবি: নিউজবাংলা
রেখার ভাই সম্রাট বলেন, ‘৯ বছর আগে আমার বোনের সঙ্গে শাহ আলমের বিয়ে হয়। এটা দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। আমরা বোন একটু রাগী প্রকৃতির। তাই বলে সে আমার বোনের গায়ে অ্যাসিড মারবে?’
সম্রাট বলেন, ‘আমার বোন বয়স যখন ১৪ তখন তার বিয়ে হয় এক দিনমজুরের সঙ্গে। আমার বোন সেখান ৪ বছর সংসার করেছে। ওই ঘরে তার ১০ বছরের একটি ছেলে আছে। ছেলেটা ওর বাবার সঙ্গেই থাকে।
‘শাহ আলমের প্রথম সংসারে স্ত্রী ও তিন মেয়ে আছে। বিয়ের সময়ে সে (শাহ আলম) বলেছিল, তিন মেয়ে রেখে তার স্ত্রী পালিয়ে গেছে।’
রেখা আক্তার বলেন, ‘অনেকদিন আগে আমার স্বামী ব্যবসার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নেয়। সেই টাকার হিসাব সে এখনও দিতে পারেনি। পরে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে।
‘রোববার বিকালে তার প্রথম পক্ষের মেয়ে ফোন করে ঈদের কেনাকাটার জন্য টাকা চায়। আমি শুনে ওকে বলি তাদের ঢাকায় আসতে বল। আমি তাদের ২০ হাজার টাকার কেনাকাটা করে দেব।
‘এতে সে রেগে যায়। শুরু হয় ঝগড়া। আসবাবপত্র ভেঙে পুরো ঘর তছনছ করে ফেলে সে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার গায়ে অ্যাসিড মেরে পালিয়ে যায়।’