একদাম, ১০০! ১০০!
এভাবেই হাঁকডাক দিয়ে শার্ট বিক্রি চলছে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত পৌনে ৯টা ছুঁই ছুঁই। ১০/১২ জন ক্রেতা ঘিরে ধরেছেন ফুটপাতের সেই দোকানটিকে।
শুধু হকার্স মার্কেটের ফুটপাতেই নয়, নিউমার্কেটসহ আশপাশের সব মার্কেটেই এমন উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে চাঁদরাতে।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও প্রত্যাশা করছেন ঈদের আগে শেষ মুহূর্তের ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা এভাবে থাকলে তাদের সুবিধার্থে সকাল পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
পুরো ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেলেও চাঁদরাতে রাজধানীর প্রায় সব মার্কেটেই ক্রেতারা ভিড় করছেন। রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট এলাকায় ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
মূলত যারা ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছাড়েননি এবং মাসজুড়ে ব্যস্ত ছিলেন তারাই এখন কেনাকাটা সারছেন। পরিবার পরিজন নিয়েও মার্কেটে এসেছেন অনেকে।
পুরান ঢাকার নয়া বাজার থেকে মার্কেটে এসেছেন আসলাম উদ্দিন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আগেই কিনছি। তবে জুতা কিনা বাকি আছিল। এখন আইসা জুতা নিলাম।’
শেষ মুহূর্তের বিক্রির বিষয়ে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের সানন্দা ফ্যাশন হাউজের বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, ‘বিক্রি ভালোই হইছে। খারাপ হয় নাই। তয় গ্যাঞ্জামটা না হইলে আরও ভালো হইত। ঈদের ছুটি বড় হওয়ায় অনেকে আগেই এলাকায় চইলা গেছে।’
চাঁদরাতে কেনাকাটার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো- শপিং মলের চেয়ে বরং ফুটপাতগুলোতে ক্রেতা সমাগম বেশি হচ্ছে। মিরপুর ১০ নাম্বার থেকে মিরপুর- ২ নাম্বারের দিকে রাস্তার দুই পাশে শত শত বিক্রেতা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। হাজার হাজার ক্রেতার সমাগমে গমগম করছে যেন পুরো এলাকাটি।
নূরজাহান মার্কেটের জি এস ফ্যাশনের বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, ‘বেচা-বিক্রি ভালোই। ভাবছিলাম এত হইবো না। তবে মানুষ আইছে মার্কেটে। জিনিসপত্র নিছে ভালোই।’
রাজধানীর গাউছিউয়ায় বাটা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার ইলিয়াস জানান, তার প্রত্যাশার শত ভাগই পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিক্রি যা হইছে ভালো আলহামদুলিল্লাহ! রাত বাড়লে ক্রেতা আরও বাড়বে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে সকাল পর্যন্ত দোকান খোলা রাখবো।’
এদিকে, শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা জমে উঠলেও নিউ মার্কেটের দোকানদাররা কয়েকদিন আগের ঝামেলার কথা এখনও ভুলতে পারছেন না। তাদের মতে, ওই ঝামেলা না হলে এবার আরও অনেক ব্যবসা হতো।
নিউ মার্কেটে ফুটপাতের দোকানদার নিরব রাজ ঢাকা কলেজের ঝামেলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এক ঝামেলায় সব শেষ।’