বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রা মানেই ছিল মহাসড়কে তীব্র যানজট। করোনার পর এবার তুলনামূলক বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়লেও সড়কে ছিল স্বস্তি।
ছুটি বেশি থাকায় কয়েক ভাগে মানুষ রাজধানী ছাড়ায় এবারে সড়কে ভোগান্তি কম।
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে সোমবার বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় সড়ক যানবাহানের চাপ ছিল একেবারেই কম।
দেশের বিভিন্ন মহাসড়কের খবর জানাচ্ছেন নিউজবাংলার প্রতিনিধিরা।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কটি অনেকটাই ফাঁকা রয়েছে। ঈদের আগের দিন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক কম যানবাহন চলাচল করছে।
সকালে মহাসড়কের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রাবনা বাইপাস, বিক্রমহাটি, রসুলপুর, কালিহাতী উপজেলার পৌলি, এলেঙ্গা, আনালিয়াবাড়ী, জোকারচরসহ বঙ্গবন্ধু সেতুর সংযোগ সড়কের গোলচত্বর এলাকা পর্যন্ত ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। ফলে গন্তব্যে যেতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও কম সময় লাগছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতোয়ার রহমান বলেন, ‘রোববার দুপুর থেকে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ কমছে। সোমবার মহাসড়ক অনেকটাই ফাঁকা। স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও কম যানবাহন চলাচল করছে।’
ঢাকা -চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক
যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কমেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও। স্বাভাবিক গতিতে চলছে যানবাহন।
সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, কাঁচপুর, মদনপুর, কেওডালা, মোগরাপাড়াসহ মেঘনা টোল প্লাজা থেকে যানবাহন ও যাত্রী সংখ্যা কমেছে।
এ সড়কের প্রায় ২১ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোথাও যানজট বা অতিরিক্ত যানবাহনের খবর পাওযা যায়নি। সড়কের যাত্রামুড়া, তারাব, বরাব, রূপসী, কর্ণগোপ, ভূলতা এলাকার বাসস্ট্যান্ড গুলোতেও কমেছে যাত্রী।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় কুমিল্লা গামী যাত্রী মামুন খান বলেন, ‘যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে। রাস্তা ফাঁকা, মানুষও কম। গাড়ি আসছে কিছুক্ষণ পর পর। আসা করছি আরামে যেতে পারব। এ জন্যই তো ইচ্ছে করে আগে বের হইনি।’
নোয়াখালীগামী যাত্রী সুমাইয়া নূর নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘গত কয়েক দিন রাস্তায় অনেক মানুষ ছিল এ কারণে তখন যায়নি। ৩০ রোজা হবে জানার পর গতকাল রাতেও রওনা হইনি।’
‘আজ যাচ্ছি। আশা করছি ভালো ভাবেই যেতে পারব। কারণ রাস্তা নেমেই দেখলাম ফাঁকা। কাউন্টারে এসে দেখলাম লোকজনও কম।’
হাইওয়ের পুলিশ পরির্দশক মাসুম খান জানান, দুই মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখী যাত্রী কমেছে। গত কয়েক দিনের মতো সড়কে যানবাহনের চাপও নেই। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত দুটি মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে অন্তত ১২ থেকে ১৫ পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশ কাজ চালিয়ে যাবে।
ঈদ শেষে রাজধানীতে আসার সময় যাত্রীদের যেন দুর্ভোগে পড়তে না হয় সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নির্বিঘ্নে চলছে যান। ছবি: নিউজবাংলা
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বিভিন্ন বাজার ও মোড়গুলোতে গাড়ির জটলা বাঁধলেও কিছুক্ষণ পরই গাড়ির চাকা ঘুরছে। এতে যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই চলাচল করছে।
সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, যানবাহনগুলো দ্রুত গতিতে চলছে। তবে ময়মনসিংহের বাইপাস মোড় পর্যন্ত এসেই জটলার সৃষ্টি হচ্ছে। পুলিশ যানজট কমাতে কাজ করেছে। ফলে এ এলাকায় কিছুক্ষণ ধীরগতি থাকলেও কিছুক্ষণ পর আবারও স্বাভাবিক গতিতে ছুটছে গাড়ি।
বাইপাস মোড়ে কয়েকটি গাড়ি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় কথা হয় ঢাকা থেকে আসা ফয়সাল নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কোনো ভোগান্তি ছাড়াই আসতে পেরেছি। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় সামান্য যানজটের সৃষ্টি হলেও কয়েকদিন আগের চেয়ে কম যানজট ছিল।’
ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ যানজট নিরসনে সড়কের কাজ করছে। আজকে আগের চেয়ে অনেকটাই যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
‘পরিবেশ এমন থাকলে আশা করছি তেমন যানজট হবে না। এ ছাড়া চুরি ও ছিনতাই রোধে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে কাজ করছে।’