শরীয়তপুরের নড়িয়ায় সালিশ বৈঠকের নামে এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত চাচাতো বোনের জামাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত তরুণের নাম মেহেদী হাসান। তার বয়স ১৮ বছর। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম আমীর হোসেন ওরফে জামু খান।
এর আগে রোববার রাতে নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ছাপর আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে।
নিহত মেহেদী ছাপর আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামের আলমগীর খানের ছেলে।
সোমবার দুপুরে মেহেদীর বাবা আমির হোসেন ও তার পরিচিত সজ্জা আক্তারকে আসামি করে নড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ রোববার ভোরে প্রধান অভিযুক্তকে আটক করে। পরে সোমবার মামলা হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মেহেদীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নড়িয়া থানায় ওসি (তদন্ত) আবীর হোসেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, ২০১৮ সালে পদ্মার ভাঙনে বাড়ি বিলীন হওয়ার পর ছাপর আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামে জমি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন মেহেদী ও তার পরিবার। পাশেই চাচাতো বোন সোনালী আক্তার স্বামী আমীর হোসেনকে নিয়ে বসবাস করতেন।
বিয়ের পর থেকেই সোনালীর সঙ্গে আমীর হোসেনের পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক করে সোনালীর পরিবার।
রোববার সন্ধ্যায় আমীর হোসেনের সঙ্গে অন্য নারীর সম্পর্কের জেরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার রাতে বাড়ির উঠানে সালিশ বৈঠক চলছিল। সেখানে আমীর হোসেন তার স্ত্রীকে মারধর করতে থাকেন। তাৎক্ষণিক বোনকে মারধরের বিষয়টির প্রতিবাদ করেন মেহেদী।
কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আমীর হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে মেহেদীকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। পরে আশপাশে থাকা আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়রা এগিয়ে এলে মেহেদীকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান আমীর।
স্থানীয়রা মেহেদীকে উদ্ধার করে প্রথমে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। এ সময় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মেহেদীর বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে ওয়ার্কশপে কাজ করত। আমার ভাইয়ের মেয়ে সোনালীর সঙ্গে তার স্বামী জামু খানের নারীঘটিত বিষয় নিয়ে ঝগড়া হচ্ছিল। প্রতিবাদ করায় অমীর ক্ষুব্ধ হয়ে আমার ছেলেকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’
নড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বলেন, ‘মেহেদী হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেক নারী আসামি আছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’