বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রংপুরে ঈদে চাঙা ভোটের রাজনীতি

  •    
  • ২ মে, ২০২২ ১৫:৫৫

রমজান মাসজুড়েই রংপুরে ছিল ইফতারকেন্দ্রিক বিভিন্ন কর্মসূচি। ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লার চা-চক্রে উপস্থিত ছিলেন সিটি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন তারা।

সব ঠিকঠাক থাকলে ডিসেম্বরে হবে রংপুর সিটির ভোট। আর তারই প্রভাব পড়েছে এবারের ঈদে। করোনার বিধিনিষেধে ঝিমিয়ে পড়া রংপুরের রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ঈদ কেন্দ্র করে নতুন করে সংগঠিত হয়েছেন। বিভিন্ন দলের নেতারা ব্যস্ত জনসংযোগে।

রমজান মাসজুড়েই রংপুরে ছিল ইফতারকেন্দ্রিক বিভিন্ন কর্মসূচি। ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লার চা-চক্রে উপস্থিত ছিলেন সিটি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন তারা।

রোজার শেষ সপ্তাহে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দাঁড়িয়েছেন গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে। অনেকে জাকাতের কাপড়, নগদ টাকাসহ ঈদসামগ্রী তুলে দিয়েছেন দুস্থদের হাতে। কেউ কেউ প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তা পাঠিয়ে দিয়েছেন। অনেকে ঈদের শুভেচ্ছাসংবলিত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন।

জাতীয় নির্বাচনের বাকি এখনও দেড় বছর হলেও তার প্রভাব পড়েছে রংপুরের ঈদে। ক্ষমতাসীন দলের এমপি, মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় নেতারা রমজানে নিজ এলাকা ঘুরে গেছেন। তৃণমূল মানুষের সঙ্গে গণসংযোগ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াচ্ছেন তারা। অনেকে নিজ নির্বাচনি এলাকায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের জন্য পাঠিয়েছেন ঈদ উপহার। একইভাবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারাও গোছাচ্ছেন ভোটের মাঠ।

আওয়ামী লীগের নেতারা তৎপর

রংপুর-২ আসনের সাংসদ ডিউক চৌধুরী তার নির্বাচনি এলাকা বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জে সম্প্রতি বিশাল ইফতার পার্টিতে অংশ নেন। সেখানে সব আলোচনাই ছিল আগামী নির্বাচনকেন্দ্রিক।

রোজার মাঝামাঝি সময়ে রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) আসনের সাংসদ ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নিজ নির্বাচনি এলাকা ঘুরে গেছেন। তিনি কয়েক দফায় অংশ নিয়েছেন ইফতার পার্টিতে। সর্বশেষ গত শনিবার তিনি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারে সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও উপহার হস্তান্তর করেন। এরপর রোববার নিজের নির্বাচনি এলাকা পীরগাছার ৯টি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে ১১ হাজার পরিবারের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করেন তিনি। টিপু মুনশি এবার রংপুরেই ঈদ করছেন।

রংপুর-৫ আসনের সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমানও এলাকায় এসেছেন। রোজায় দুই দফায় এসেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এই শীর্ষ নেতা। অংশ নেন বিভিন্ন কর্মসূচিতে।

রংপুর-৬ আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সর্বশেষ ২০ এপ্রিল পীরগঞ্জ এসেছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন উন্নয়ম কর্মকাণ্ডের তদারক করা ছাড়াও সাধারণ মানুষের খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবার দেশ মোটামুটি করোনা মুক্ত, তাই দেশের মানুষ অনেক দিন পর ঈদে পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ উৎসব করতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ সবার কাছেই আমরা গেছি। ইফতার পার্টি করেছি, ইফতার বিতরণ করেছি, সেহরি বিতরণ করেছি, মতবিনিময় করেছি, ঈদ উপহার দেয়াসহ সবই আমরা করেছি। আমরা আগামী নির্বাচনের জন্য দল যেমন গুছিয়েছি, তেমনি সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছি দেশের উন্নয়নের জন্য, রংপুরের জন্য আওয়ামী লীগকে প্রয়োজন।’

বিএনপি নেতাদের নানা কর্মসূচি

সরকারবিরোধী আন্দোলনে তৃণমূলে বিএনপিকে চাঙা করতে বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে রংপুর জেলা ও নগর বিএনপিকে। দলের নেতারা সম্প্রতি নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ের দলীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে বাধার মুখেও পড়েছেন তারা।

সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল বিশাল ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে রংপুর নগর ও জেলা বিএনপি। জনসাধারণের কাছেও যাচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতারা।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি সাধারণ মানুষের দল। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে সাধারণ মানুষ অতি কষ্টে রয়েছে। তাদের ঈদ করা কষ্টকর হয়ে গেছে। আমরা সব সময় সাধারণ মানুষের সঙ্গে ছিলাম, আছি।

‘রাজনীতির মাঠে পুলিশ আমাদের কোনো কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না। তবুও আমরা যতটুকু পারি করছি। দলের নেতাকর্মীরা মামলা মাথায় নিয়ে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে যাচ্ছেন।’

জাতীয় পার্টি ব্যস্ত দল গোছানোয়

রংপুর জেলার ছয়টি আসনের দুটি জাতীয় পার্টির দখলে। শক্ত অবস্থান আছে নগরীতেও। সিটি মেয়র পদটিও জাতীয় পার্টির। আগামী ডিসেম্বরে সিটি নির্বাচনেও যেকোনো মূল্যে মেয়র পদ ধরে রাখতে চায় জাতীয় পার্টি।

এ জন্য শুরু হয়েছে দল গোছানোর প্রক্রিয়া। ঈদ সামনে রেখে এই তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা প্রতিটি ওয়ার্ডে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। সাধারণ ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন তিনি ও তার নেতাকর্মীরা।

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নগর জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভোটের রাজনীতি নয়, আমি সবার মেয়র। সবার পাশে সাধ্যমতো দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। জাতীয় পার্টি একটি গণমুখী সাধারণ মানুষের দল। সাধারণ মানুষ এবং ভোটারই আমার ও দলের শক্তি।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন তো আছেই, নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচন ঘিরে সবার পাশে দাঁড়ানো আমার উদ্দেশ্য নয়, সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার লক্ষ্য।’

এ বিভাগের আরো খবর