বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদের আগের দিনে স্বস্তির ট্রেনযাত্রা

  •    
  • ২ মে, ২০২২ ১০:৫৮

সকালে কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় কম। যাত্রার আগ মুহূর্তেও টিকিট পেয়েছেন যাত্রীরা। ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল না ট্রেনগুলোতে; সময়মতোই ছেড়ে গেছে স্টেশন।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনে ঈদযাত্রা। ওই দিন থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়।

অগ্রিম টিকিটের ভিত্তিতে ঈদযাত্রার ট্রেনগুলো ছেড়ে গেছে রোববার পর্যন্ত। চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদ হচ্ছে মঙ্গলবার। তাই সোমবারের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় রোববার রাত ৮টা থেকে।

এ সুযোগে ট্রেনের টিকিট কেটে বাড়ির পানে ছুটছেন হাজারো মানুষ।

সকালে কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় কম। যাত্রার আগ মুহূর্তেও টিকিট পেয়েছেন যাত্রীরা।

ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল না ট্রেনগুলোতে; সময়মতোই ছেড়ে গেছে স্টেশন।

যাত্রী কম এবং সকালের দিকে আবহাওয়া শীতল থাকায় বেশ উৎফুল্ল মেজাজেই গন্তব্যে রওনা করতে পেরেছেন যাত্রীরা। তাদের একজন গাইবান্ধার তারেক।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এ কর্মী রোববার পর্যন্ত ছুটি পাননি। ধরেই নিয়েছিলেন ঈদ হবে ঢাকায়, কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদ এক দিন পিছিয়েছে। এতে বাড়ি যাওয়ার ‍সুযোগ পান তিনি।

রংপুর এক্সপ্রেসের এই যাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদ এখানেই করতে হবে, এমনটাই ধরে নিয়েছিলাম। রোববার কাজও শেষ হলো। আর চাঁদও দেখা যায়নি, যার কারণে সোমবার থেকে ছুটি পেয়ে গেলাম।

‘যেতে চাইছিলাম না, কিন্তু যেহেতু ছুটি পেলাম, তাই আপনজনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার দিকে খবর দেখে রেলস্টেশনে এসেছিলাম। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাই।’

ধূমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রী হেলাল যাবেন পাবনায়। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই কয়দিন তো ট্রেনের টিকিট পাওয়াই মুশকিল ছিল, তবে আজ ঈদ না হওয়ায় গতকাল সন্ধ্যার দিকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়।

‘এই সুযোগে আমি টিকিট কাটতে স্টেশনে গিয়েছিলাম। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে রাত ১১টার দিকে টিকিট পেয়েছি; বাড়িতে যাচ্ছি। কী যে শান্তি লাগছে ভাই, বলে বোঝাতে পারব না।’

রংপুরের আরেক যাত্রী মুজাহিদ হাসান। আন নূর তাহফিজুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসার এ পরিচালক বলেন, ‘টিকিট বিক্রি হচ্ছে জানতে পেরে রাতে স্টেশনে আসি। ১১টার পরে হলেও টিকিট পেয়েছিলাম বলে আজকে যেতে পারছি। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম যে এখানেই ঈদ করতে হবে।

‘কারণ এই হুড়াহুড়ি করে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ট্রেনে চেপে বাড়ি যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। টিকিট পাওয়ায় যাচ্ছি।’

আনসারে চাকরি করেন রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটার রইস উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি যেতে পারছি না, তবে ছেলেমেয়েদের বাড়িতে ঈদ করতে পাঠাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল রাতে টিকিট কেটেছি লাইনে দাঁড়িয়ে। এর আগে মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি যে ঈদের অগ্রিম টিকিট পেতে ব্যাপক ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়েছে মানুষকে, তবে গতকাল রাতে টিকিট পেতে সে রকম ঝামেলা সহ্য করতে হয়নি।

‘কিছুক্ষণ অবশ্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে, তবে টিকিট পেয়েছিলাম। তাই আজকে স্টেশনে এসেছি ওদের বিদায় দিতে।’

দেওয়ানগঞ্জগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের যাত্রী আলামিন ইসলাম ও মামা আজিজুল ইসলাম কাজ করেন নারায়ণগঞ্জে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন জামালপুর।

তারা জানান, সোমবার সকালে এসে সহজেই টিকিট পেয়ে গেছেন, সিটও পেয়েছেন।

এর আগে শনি-রোববার সকালে ও ইফতারের পরে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে মানুষের ভিড় বেশি দেখা গেছে। টিকিট না পাওয়ায় স্ট্যান্ডিং টিকিটে যাত্রা করেছেন হাজারো মানুষ। কোনো কোনো ট্রেনে পা ফেলার জায়গা ছিল না।

বিনা টিকিটে যেন কেউ যেন ভ্রমণ করতে না পারে তার জন্য তৎপর ছিলেন রেলওয়ের কর্মীরা। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুহূর্তে ছিল তাদের চেকপোস্ট।

যাদের টিকিট ছিল না, তাদের ‘ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষকের বাড়তি ভাড়ার টিকিট’ দিয়ে ভ্রমণ নিশ্চিত করা হয়।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে শুধু আন্তনগর ট্রেনের আসনই ২৭ হাজারের বেশি।

ঈদ শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হয় রোববার। ফিরতি টিকিটের জন্য গতকাল এবং আজও খুব বেশি লাইন দেখা যায়নি কাউন্টারে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে স্টেশন থেকে যাত্রা, সেই স্টেশন থেকেই দেয়া হবে ফিরতি টিকিট।

এবারের ঈদযাত্রার সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

গত ২৩ এপ্রিল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ওই দিন ২৭ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিলে ২৮ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিলে ২৯ এপ্রিল, ২৬ এপ্রিলে ৩০ এপ্রিল এবং ২৭ এপ্রিলে দেয়া হয় ১ মের টিকিট।

সে সময় টিকিট পেতে একরকম যুদ্ধ করতে দেখা গেছে প্রত্যাশীদের।

এ বিভাগের আরো খবর