বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টরন্টো ফ্লাইট জুন থেকে হতে পারে

  •    
  • ২ মে, ২০২২ ০৭:৫৬

এই রুটটিতে আপাতত সরাসরি ফ্লাইট শুরু না করে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার শহরে স্টপওভারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান। এর কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, রাশিয়ায় যুদ্ধাবস্থার কারণে দেশটির আকাশসীমা ব্যবহার নিরাপদ নয়। এটি এড়াতেই মূলত এই স্টপওভারের চিন্তা।

আগামী জুন থেকে কানাডার টরন্টোতে পুরোদমে বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। কানাডীয় কর্তৃপক্ষকে ১২ জুন থেকে ফ্লাইট শুরুর প্রস্তাব দিয়েছে বিমান। কানাডা বলছে, ২৬ জুনের পর থেকে ফ্লাইট শুরুর কথা। এখন দুই সংস্থা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে।

তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এই রুটটিতে আপাতত সরাসরি ফ্লাইট শুরু না করে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার শহরে স্টপওভারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান। এর কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, রাশিয়ায় যুদ্ধাবস্থার কারণে দেশটির আকাশসীমা ব্যবহার নিরাপদ নয়। এটি এড়াতেই মূলত এই স্টপওভারের চিন্তা।

এর আগে, গত ২৬ মার্চ টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৭০ যাত্রী নিয়ে উড়াল দেয় বিমানের প্রুভেন (পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক) ফ্লাইট। ঢাকা থেকে উড়াল দিয়ে টানা সাড়ে ১৮ ঘণ্টা আকাশে থেকে কানাডায় পৌঁছায় বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ।

দেশি এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে একটানা এতক্ষণ আকাশে ওড়ার নজির আর নেই। বিশ্বেও এমন নজির খুব কমই রয়েছে। মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বলছে, এটি যাত্রী নিয়ে কোনো সেভেন এইট সেভেন উড়োজাহাজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ একটানা ওড়ার রেকর্ড।

বিমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাশিয়ার পরিস্থিতির কারণে আপাতত আমরা ম্যানচেস্টারে স্টপওভার দিয়ে টরন্টোতে ফ্লাইট চালানোর বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেহেতু সেখানে আমাদের একটি রুট আছে। আর এখান থেকে যাত্রী নিতেও কোনো বাধা নেই।

‘আমরা চেষ্টা করছি, কানাডা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ফিফথ ফ্রিডমের অনুমোদন নিতে। সেটি পাওয়া গেলে ম্যানচেস্টার থেকে যাত্রী নিতেও কোনো বাধা থাকবে না।’

আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালানোর ক্ষেত্রে দুটি গন্তব্যের মধ্যবর্তী কোনো গন্তব্য থেকে যাত্রী নিতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের অনুমোদন নিতে হয়। এভিয়েশনের পরিভাষায় এটিকে ফিফথ ফ্রিডম বলা হয়।

বাণিজ্যিক ফ্লাইট কবে নাগাদ শুরু হবে জানতে চাইলে বিমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত যে প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা, সেটি হলো, আমরা ১২ জুন থেকে বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু করতে কানাডীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, ২৬ জুন থেকে সেখানে ভ্যাকেশন শুরু হচ্ছে। সে সময় থেকে আমরা ফ্লাইট শুরু করতে পারি কি না।

‘এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের মার্কেটিং বিভাগ কাজ করছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই এ বিষয়ে একটি তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাব। এরপর তারিখ ঘোষণা করা হবে। পুরো পরিস্থিতি আমরা এখন পর্যবেক্ষণ করছি।’

ঢাকা থেকে আকাশপথে টরন্টোর যে দূরত্ব, এটিকে এভিয়েশনের পরিভাষায় বলা হয় ‘আল্ট্রা লং হওল’। বিশ্বে এই ধরনের গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট চলার নজির খুব বেশি নেই।

এয়ারলাইনসগুলো সাধারণত তৃতীয় কোনো গন্তব্যে স্টপওভার করেই ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর একটি বড় কারণ, এ ধরনের দূরত্বে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে উড়োজাহাজে পর্যাপ্ত জ্বালানি বহন করতে হয়। বাড়তি জ্বালানি বহন করার কারণে উড়োজাহাজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে কমিয়ে রাখা হয় যাত্রীসংখ্যা। এভিয়েশনের পরিভাষায় এটিকে বলে লোড পেনাল্টি।

ঢাকা থেকে সরাসরি টরন্টো যেতে সময় লাগে প্রায় ১৬ ঘণ্টা। এই রুটে বিমান ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ। এই উড়োজাহাজগুলোর জ্বালানি খরচ অন্যগুলোর চেয়ে অন্তত ২০ শতাংশ কম। আর এ কারণে এগুলো পূর্ণ যাত্রী নিয়ে একটানা ১৬ ঘণ্টারও বেশি সময় আকাশে উড়তে পারে।

সাড়ে ১৮ ঘণ্টা উড়াল দিয়ে বিমানের যে উড়োজাহাজটি টরন্টোয় গিয়েছিল, এই পথ পাড়ি দেয়ার জন্য সেটিতে বহন করা যেত সর্বোচ্চ ১৪০ যাত্রী। অথচ বিমানের ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ২৯৮ জন।

১৬ ঘণ্টায় টরন্টো পৌঁছানোর রুট ব্যবহার করে যদি এই উড়োজাহাজটি দিয়ে সরাসরি টরন্টো ফ্লাইট করা হতো, তাহলে সেখানে সর্বোচ্চ বহন করা যেত ২৩০ যাত্রী।

ঢাকা থেকে জাপানের নারিতা হয়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং কানাডার টরন্টো হয়ে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে আকাশপথে যুক্ত হতে চেষ্টা বেশ কয়েক বছর ধরেই চালিয়ে আসছে বিমান। কিন্তু করোনার কারণে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়নি।

এ রুটে বিমানের ফ্লাইট চলাচল পুরোদমে শুরু হলে এয়ারলাইনসটি তার বহরে থাকা লম্বা পাল্লার উড়োজাহাজগুলোর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিমানের বহরে লম্বা দূরত্বে উড়তে সক্ষম অন্তত ১০টি উড়োজাহাজ থাকলেও রুট না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সেগুলোর সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ ও চারটি বোয়িং ৭৭৭ মডেলের উড়োজাহাজ। এর প্রত্যেকটি টানা ১৬ ঘণ্টার বেশি উড়তে সক্ষম।

লম্বা দূরত্বের মধ্যে বর্তমানে ফ্লাইট চালু রয়েছে শুধু লন্ডন রুটে। এ রুটে সরাসরি যেতে সময় লাগে প্রায় ১১ ঘণ্টা।

বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করা কোনো এয়ারলাইনসেরই ঢাকা থেকে টরন্টোয় সরাসরি ফ্লাইট নেই। বিমান আশা করছে, নারিতা ও টরন্টোয় ফ্লাইট শুরু করলে মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক আন্তর্জাতিক যাত্রী তারা পাবে।

এ বিভাগের আরো খবর