রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রায় অচেতন তিন রোগীকে নিয়ে আসা হয়।
এদের মধ্যে তাসলিমা বেগম নামে এক নারীকে স্টোমাক ওয়াশ করে ভর্তি রাখা হয়। আর তাসলিমার স্বামী ও শাশুড়িকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
অভিযোগ ওঠেছে, তাসলিমার পুত্রবধূই সবাইকে কোকের সঙ্গে নেশাজাতীয় কিছু পান করিয়ে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর ভাটারায় ওই ঘটনার সূত্রপাত।
অসুস্থ তাসলিমার স্বামী আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমি নয়া নগর নতুন বাজার এলাকায় চায়ের দোকান করি, যেটুকু আয় করি এ দিয়ে ঘর ভাড়া দিয়ে স্বচ্ছল সংসার আমার।
‘শনিবার বিকেলে আমার পালক ছেলে বাবু মিয়ার স্ত্রী রিয়া আমাদের বাসায় ওঠে। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে তার সাথে নিয়ে আসা কোকোকোলা সবাইকে খাওয়ায়। পরে আমারা ঘুমিয়ে পড়ি।
‘মধ্যরাতে পাশের ঘরের লোকজন আমাদের সেহেরি খাওয়ার জন্য যখন ডাকাডাকি করে তখন উঠে দেখি আমি অচেতনের মতো। কিছুটা জ্ঞান ফিরে আসলে দেখি, আমার স্ত্রী আর মা- এরা কোনো কথা বলে না। অচেতন পড়ে আছে। কিন্তু আমার ছেলের বউ রিয়াকে দেখি না!
‘তখন আমার ছোট মেয়ে দেখে, ট্রাঙ্কের তালা খোলা! ৩০ হাজার টাকা নাই! কাপড়-চোপড় এলোমেলো!
আবু সায়ীদ জানান, কিছুটা জ্ঞান ফিরে আসলে আত্মীয়-স্বজন তাদেরকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে রোববার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরও জানান, পালক পুত্র বাবু মিয়াকে ৬ মাস আগে ভাটারা নয়ানগর এলাকা থেকে বের করে দেয়া হয়। সে ওই এলাকায় ছিনতাইকারী হিসেবে পরিচিত ছিল। মিরপুরের রিয়াকে বিয়ে করেছিল বাবু।
সেই রিয়াকেই পুত্রবধূ বেশে পাঠিয়ে ৩০ হাজার টাকা চুরি করিয়েছে বাবু নিজেই, এমন দাবি করেন আবু সায়ীদ।
দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘এমন সময় কাজটা করল; যখন আমার ঘর ভাড়া দিতে হবে, ঈদের খরচ করতে হবে। আমি গরিব মানুষ আমার পুঁজি-বাট্টা সব নিয়ে গেল।’
স্ত্রী সুস্থ হলে থানায় মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন সায়ীদ।