বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২ ছেলেকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা হলো না জালালের

  •    
  • ১ মে, ২০২২ ২৩:১৩

নিহতের মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘আল্লাহ, ঈদের আগে আমাদের এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল। ছোট ছোট দুটো পোতাকে (জালালের দুই ছেলে) এখন কে দেখবে?’

রবিউল ও জিহাদ দুই ভাই। একজনের বয়স ১০, অপরজনের ৫। রবিউল পঞ্চম শ্রেণিতে পড়লেও জিহাদ এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি।

পাঁচদিন আগে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন তাদের ট্রাকচালক বাবা জালাল হাওলাদার। সন্তানদের কথা দিয়ে গেছেন রোববার ফিরে এসে মার্কেটে নিয়ে যাবেন। ঈদের নতুন জামা-প্যান্ট কিনে দেবেন।

সন্তানদের জন্য একটু ভালো মানের পোশাক কিনতে নিজের ব্যবহৃত মোবাইলটিও বিক্রি করে দিয়েছিলেন জালাল।

রোববার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরার কথা থাকলেও সময়ের কিছুটা বাড়িতে ফেরেন তিনি। তবে জীবিত নয়, মৃত অবস্থায়।

রোববার সকালে বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত তিনজনের মধ্যে বাগেরহাট শহরের খারদ্বার এলাকার রুস্তম হাওলাদারের ছেলে ট্রাকচালক জালাল হাওলাদারও ছিলেন।

রোববার দুপুরে নিহতের মরদেহ শহরের আলিয়া মাদরাসা সড়ক সংলগ্ন ভাড়া বাড়িতে পৌঁছালে শোকের মাতম শুরু হয় সেখানে। স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে চারপাশ।

নিহতের বড় ছেলে ১০ বছর বয়সী রবিউল বলে, ‘আব্বু আমারে আর ভাইরে বলে গেছে ঈদের জামা কিনে দিবে এসে। অনেক খাবারও কিনবে আমাদের নিয়ে। ঈদের দিন সেই সব খাবো। কিন্তু আব্বু তো এখন কথাই বলে না। আল্লাহর কাছে চলে গেছে।’

নিহতের স্ত্রী পলি বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘পাঁচদিন আগে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আমারে বলে গেছে, ছেলেদের তুমি দেখে রাইখো। ঈদে অনেক খরচ। আমি একবারে টাকা পয়সা জোগাড় করে বাড়ি ফিরবো। বলিছে, আমি রোববার সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি চলে আসবানি। ছেলেদের জামা-কাপড় কিনে দেওয়ার জন্য বড় মোবাইলও তিন হাজার টাকায় বেইচে দিছে। কিন্তু এ আমাদের কি সর্বনাশ হয়ে গেল!’

নিহতের মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘আল্লাহ, ঈদের আগে আমাদের এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল। ছোট ছোট দুটো পোতাকে (জালালের দুই ছেলে) এখন কে দেখবে?’

এদিকে জালালের মৃত্যুর খবরে রোববার বিকেলে তার বাড়িতে যান বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন, ইউএনও মুহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ইউএনও মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারটির এ ক্ষতি অপূরণীয়। তারপরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা এবং কিছু খাদ্য সামগ্রী উপহার দেয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে এক শিশুসহ তিনজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- টাঙ্গাইল জেলার মাসুদ শেখের শিশু পুত্র আয়াস শেখ, বাগেরহাট শহরের খারদ্বার এলাকার জালাল এবং ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা এলাকার শুকুর আলীর ছেলে বাস চালক আব্দুল্লাহ।

এ বিভাগের আরো খবর