কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সারা দেশে দুই বছরের বেশি সময় প্রায় স্থবির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তৎপরতা। নেতাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি নেই বললেই চলে। ফলে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ অনেকটাই কমে গেছে।
তবে কোভিড নিয়ন্ত্রণে আসার পর শিথিল হয়েছে বিধিনিষেধ। সংক্রমণের ভয় দূর করে আবার ঈদের আনন্দ উদযাপনের প্রস্তুতি দেশজুড়ে। রাজনৈতিক নেতাদের অনেকে এবার ছুটছেন নিজেদের নির্বাচনি এলাকায়। আগামী জাতীয় নির্বাচন মাথায় রেখে ঈদের সময়ে জনসংযোগে জোর দিচ্ছেন তারা।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ এবারও কাটবে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে। সেখানেই সীমিত পরিসরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারেন তিনি। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদ করবেন রাজধানীতে। এরপর তিনি নিজ নির্বাচনি এলাকা নোয়াখালীতে যাবেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ ঈদ করবেন তার নির্বাচনি এলাকা ভোলায়। তিনি ইতোমধ্যে সেখানে পৌঁছেছেন। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ঈদের দিন ঢাকায় কাটালেও এরপরে নিজ নির্বাচনি এলাকা শেরপুরে যাবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ঈদ করবেন ঢাকায়। ঈদের দিন পুরো সময় তিনি কাটাবেন নিজের নির্বাচনি এলাকা মোহাম্মদপুরে।
দলের তিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঈদ করবেন নিজেদের নির্বাচনি এলাকায়। মাহবুবউল আলম হানিফ কুষ্টিয়ায়, হাসান মাহমুদ চট্টগ্রামে আর আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ঈদ করবেন মাদারীপুরে। এরই মধ্যে নিজেদের এলাকায় চলে গেছেন।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ঈদ করবেন ঢাকায়। ঢাকা-৮ নির্বাচনি আসনের লোকজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করবেন তিনি।
প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবার ঈদ করছেন রাজধানীতে। ঈদের দিন বেলা ১১টায় দলের বনানী কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। ঈদুল ফিতরের দিন সকালে তিনি নামাজ পড়বেন উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টর জামে মসজিদ ঈদগাহ মাঠে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু ঈদ করবেন ঢাকায়। নামাজ পড়বেন জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার ঈদ জামাতে। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ঈদ করছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারও এবার ঈদ করছেন রাজধানীতে। তিনি নামাজ পড়বেন গুলশানের আজাদ মসজিদে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষ জামিনে মুক্ত আছেন। তিনি অবস্থান করছেন গুলশানে নিজ বাসভবন ফিরোজায়। ঈদের দিন তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন পরিবারের সদস্যরা।
কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক যুগেরও বেশি সময় লন্ডনে অবস্থান করছেন। তারেকের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান, ছোট ভাই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিথী ও তার দুই মেয়েও ঈদ করবেন লন্ডনে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঈদ এবার কাটবে ঢাকায়। উত্তরায় একটি মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করবেন তিনি।
এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঈদের দিন ঢাকায় থাকবেন।
আব্দুল মঈন খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাদের নির্বাচনি এলাকায় ঈদ করবেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ও শামসুজ্জামান দুদু তাদের নিজ নির্বাচনি এলাকায় ঈদের নামাজ পড়বেন বলে জানা গেছে।
দলের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম, আমানুল্লাহ আমান, তাহসীনা রুশদীর লুনা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল ঢাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন।
এ ছাড়া বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন তাদের নিজ নির্বাচনি এলাকায় ঈদ করবেন।
বিএনপির দলীয় ছয় এমপির মধ্যে পাঁচজন নিজ নিজ এলাকায় ঈদ করবেন। তবে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ঈদের দিন ঢাকায় থাকবেন।
বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদ, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, মোশাররফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, উকিল আব্দুস সাত্তার, জাহিদুর রহমানের নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করার কথা রয়েছে।