বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিমুলিয়ার এক ঘাট কেবল মোটরসাইকেল পারাপারে

  •    
  • ১ মে, ২০২২ ১৫:২৬

নাহিদা আক্তার তার স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে রওনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মোহাম্মদপুর থেকে সকাল বেলা রওনা হয়েছি। ঘাট এলাকায় ১০টায় এসেছি। মোটরসাইকেলের অনেক চাপ... আমি তো ছায়ায় দাঁড়াতে পেরেছি। আমার স্বামী মোটরসাইকেল নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে।’

এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেলের আধিক্য চোখে পড়ার মতো। সড়কপথের পাশাপাশি ঘাটগুলোতেও মোটরসাইকেলে বাড়ি যেতে দেখা গেছে বিপুল যাত্রীদের।

শুধুমাত্র মোটরসাইকেল পার করার জন্য মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়ার একটি ঘাট নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এ ঘাট দিয়ে ৯টি ফেরি কেবল মোটরসাইকেল নিয়ে ছেড়ে গেছে। প্রতিটি ফেরিতেই ছিল হাজারের উপর মোটরসাইকেল।

শনিবার সেহরির পর থেকেই এ ঘাটে ভিড়তে শুরু করেন দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। বেশিরভাগকেই দেখা গেছে মোটরসাইকেলে।

মোটরসাইকেল কেন? জানতে চাইলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুলনাগামী আরাফাত রহমান বলেন, ‘আমরা যদি বাসে বা ভেঙে যাই, যেতে লাগবে ৩০০০ টাকা, আসতে ৩০০০ টাকা। মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছি, ৯০০ টাকার তেল ভরেছি। আশা করি এই টাকায় আমি বাড়িতে পৌঁছে যাব।’

এক নম্বর ঘাটে ফেরির অপেক্ষায় থাকা আলম বেপারী বলেন, ‘আমি কেরানীগঞ্জ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ঘাট এলাকায় এসেছি। রাস্তা খুবই ভাল। যাব নড়াইল। ফেরিতে ওঠার জন্য এক নম্বর ঘাটে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। অনেক ফেরি আসছে, চলে যাচ্ছে, উঠতে পারি নাই।’

নাহিদা আক্তার তার স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে রওনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মোহাম্মদপুর থেকে সকাল বেলা রওনা হয়েছি। ঘাট এলাকায় ১০টায় এসেছি। মোটরসাইকেলের অনেক চাপ। আমি আসার পর ৩টি ফেরি ছেড়ে গেছে। ঘাটে এক একটা করে ফেরি আসছে আর মোটরসাইকেল উঠছে।

‘আরও বেশ সময় লাগবে মনে হচ্ছে ফেরিতে উঠতে। ঘাটে অনেক গরম। আমি তো ছায়ায় দাঁড়াতে পেরেছি। আমার স্বামী মোটরসাইকেল নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে।’

টঙ্গি থেকে রওনা দিয়ে খুলনা যাচ্ছেন জহির রায়হান। তিনি বলেন, ‘এক নম্বর ফেরিঘাটে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি প্রায় আড়াই ঘণ্টার উপরে। অনেকগুলো ফেরি আসছে, উঠতে পারি নাই। কখন উঠতে পারব তাও জানি না। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করব, সবার কেনাকাটা মায়ের জন্য শাড়ি, বৌয়ের জামাকাপড়, বাচ্চাদের জামাকাপড় সব আমার সঙ্গে। এখন যেতে পারলেই হলো।’

মোটরসাইকেলের জন্য ঘাট সুনির্দিষ্ট করে দেয়ায় অন্য ঘাটে চাপ কমেছে বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘মোটরসাইকেলের চাপ বেশি। ফেরিতে কী পরিমাণ মোটরসাইকেল পার হয়েছে তা এখন বলা মুশকিল। তবে হাজার হাজার মোটরসাইকেল পার হয়েছে। এক নম্বর ফেরিঘাটে হাজার হাজার মোটরসাইকেল পারাপারের অপেক্ষায় আছে। মোটরসাইকেলে একটি ঘাট হওয়ায় অন্যান্য ফেরিঘাটগুলোতে প্রতিবন্ধকতা হয় নাই। গাড়ি সহজে লোড-আনলোড করতে পারছি।’

এদিকে, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বেড়েছে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। ফেরির অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা প্রখর রোদে নাজেহাল।

ফরিদপুরের আমেনা বেগম বলেন, ‘ভোর ৫টা থেকে পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি পারের জন্য অপেক্ষা করছি। বেলা ১১টার দিকে ফেরির দেখা পাই। প্রচণ্ড রোদে বাচ্চাদের নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।’

আরেক যাত্রী শিউলি বেগম বলেন, ‘ফেরিপারের জন্য পাটুরিয়া ঘাটে প্রায় ৭ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু তারপরও ফেরি পাইনি। এখন রোদের মধ্যে বসে আছি।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান, শনিবার রাত থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। যাত্রীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। এর পরে যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপদে ঘাট পারাপারের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। আশা করছি বিকেল নাগাদ যাত্রীদের চাপ কিছুটা কমবে।’

এর আগে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকা বাইকচালকদের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় ফেসবুকে। বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘বাইকজটের’ ওই ছবি শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সেতুর পূর্ব প্রান্তের।

সেতুর টোলপ্লাজা ইনচার্জ প্রবীর ঘোষ নিউজবাংলাকে জানান, ওই দিন হুট করে একসঙ্গে অনেক মোটরসাইকেল আরোহী সেতু এলাকায় চলে আসেন। এতে দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়। সাধারণ সময়ে সব লাইন দিয়ে মোটরসাইকেল প্রবেশ করলেও ঈদের কারণে গোলচত্বর থেকেই বাইকারদের আলাদা লাইনে টোলপ্লাজায় যেতে হচ্ছে। এতে করে ওই জট তৈরি হয়েছিল।

এ বিভাগের আরো খবর