ফুল আর চোখের জলে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন সিলেটবাসী।প্রয়াত মুহিতের মরদেহ রোববার দুপুরে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়ার পর সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানান।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিতকে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকে শহীদ মিনারে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এর আগে সেখানে কালো কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় শ্রদ্ধা নিবেদন মঞ্চ।
প্রথমে সিলেট মহানগর পুলিশের একটি চৌকস দল ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করে। পরে প্রয়াতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।এরপর সাবেক অর্থমন্ত্রীর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
নগরীর ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বেলা ২টায় তার আবারও জানাজা হবে। দাফন করা হবে নগরীর রায়নগরের পারিবারিক কবরস্থানে। মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ও বাবা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজের কবরের পাশেই তাকে দাফন করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।সবশেষ জানাজায় অংশ নিতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজারও মানুষ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হয়েছেন।শনিবার রাতে ঢাকা থেকে সড়কপথে প্রয়াত মুহিতের মরদেহ সিলেটে আনা হয়। সেখানে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাকে শেষবারের মতো দেখেন। দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিতের মৃত্যুতে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ দুদিনের শোক পালন করছে।
এ জন্য দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও নেতাকর্মীরা কালোব্যাজ ধারণ করছেন। ঈদুল ফিতরের পরদিন হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করবে সিলেট আওয়ামী লীগ।
রাজধানীর একটি হাসপাতালে শুক্রবার রাত ১টার দিকে মারা যান মুহিত। তিনি ক্যানসারসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ (সদর-নগর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হন। এই সময়ে তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে দেশের সবচেয়ে বেশিবার বাজেট প্রণয়নের রেকর্ড গড়েন।
‘আলোকিত সিলেট’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।