বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তেঁতুলতলা মাঠ: মা-ছেলেকে ‘বেআইনিভাবে’ আটকের তদন্ত দাবি

  •    
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২২ ২২:৪৬

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কাউকে গ্রেপ্তার করলে তার নিকটস্থ আত্মীয়-স্বজনকে জানাতে হবে। কলাবাগান থানা কর্তৃক রত্নাকে আটকের পর তার শিশু সন্তানকে আটক করে এবং তার সঙ্গে সারা দিন কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি, যা অনৈতিক ও বেআইনি।

রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার আন্দোলন করায় সৈয়দা রত্না ও তার কিশোর ছেলেকে ‘বেআইনিভাবে’ আটকের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছে ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক ও সংগঠন।

এ বিষয়ে তদন্ত চেয়ে শনিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চিঠি দেয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ এপ্রিল কলাবাগান এলাকার তেতুলতলা মাঠ রক্ষায় সোচ্চার হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে দিনভর থানায় আটকে রাখা হয়। বিক্ষোভের মুখে রোববার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে কলাবাগান থানা থেকে দুজনকে মুক্তি দেয়া হয়।

কলাবাগান এলাকার একটি খেলার মাঠে থানা ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দা রত্নাসহ স্থানীয় জনগণ। এই মাঠে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই দিন বেলা ১১টার দিকে ওই নারীকে আটক করে পুলিশ। পরে তার ছেলেকেও ধরে পুলিশ ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়। দিনভর মা-ছেলেকে থানা হাজতে আটকে রাখা হয়।

তাদের আটকের খবর পেয়ে বেলা দুইটার দিকে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ থানায় প্রতিবাদ জানায়। সে সময় থানায় দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি এবং কেউ ফোন রিসিভ করেননি বলে মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা জানান।

মাঠটি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী গত ৪ ফেব্রুয়ারি পান্থপথের কনকর্ড টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন করে এবং ‘কলাবাগান এলাকাবাসী’র ব্যানারে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে স্থানীয় শিশু-কিশোর ও স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেন।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে খেলতে যাওয়া কয়েকটি শিশুর কান ধরে ওঠবস করায় পুলিশ। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।

গত ২৮ এপ্রিল কলাবাগান এলাকার তেঁতুলতলা মাঠে কোনো ভবন স্থাপিত হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনাকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সংবিধানে ৩৫(৫) অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী যেকোনো ব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুরতা নিষিদ্ধ। যদি আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন নাবালক হন, তবে পুলিশ কর্মকর্তাকে শিশু আইন, ২০১৩ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত বিধান মেনে চলতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী শিশুদের প্রতি সব ধরনের নিষ্ঠুর ও অবমাননাকর শাস্তিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।

সুতরাং শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী, এভাবে কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার ও আটক বেআইনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কাউকে গ্রেপ্তার করলে তার নিকটস্থ আত্মীয়-স্বজনকে জানাতে হবে। কলাবাগান থানা কর্তৃক রত্নাকে আটকের পর তার শিশু সন্তানকে আটক করে এবং তার সঙ্গে সারা দিন কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি, যা অনৈতিক ও বেআইনি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অমান্য করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

তেঁতুলতলা মাঠে কোনো ভবন স্থাপিত হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। ছবি: নিউজবাংলা

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুলিশ কর্তৃক সৈয়দা রত্না ও তার শিশুকে তুলে আনা, আটক, মুচলেকা নেয়া, হয়রানি করা এবং সারা দিন থানায় দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া না যাওয়াসহ প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।

পাশাপাশি কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে খেলতে যাওয়া শিশুদের কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনারও তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন, অ্যাডভোকেট জেড আই খান, ড. হামিদা হোসেন, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, শিরীন হক, খুশি কবীর, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মোবাশ্বের হোসেন, রাশেদা কে চৌধুরী, শামসুল হুদা, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান

আরও স্বাক্ষর করেন, অধ্যাপক ফেরদৌস আজিম, ড. শহিদুল আলম, রেহনুমা আহমেদ, সারা হোসেন, জাকির হোসেন, ড. পারভীন হাসান, ডা. মালেকা বানু, ড. সামিনা লুৎফা, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, আলমগীর কবীর, আরিফ নূর, রুনু আলী, জামসেদ আনোয়ার তপন।

এ বিভাগের আরো খবর