বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কালবৈশাখী: বগুড়ায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি

  •    
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২২ ১৮:২৬

জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, কালবৈশাখীতে বগুড়ায় ১৪ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৯০ হেক্টর জমির শাকসবজি, ৫০ হেক্টর জমির ভুট্টা ও ১৫ হেক্টর জমির কলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বগুড়ায় কালবৈশাখীতে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানসহ একাধিক ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে ভুট্টা, কলাসহ সবজিও রয়েছে। শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে শুরু হয় ঝড়। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে চলা এ ঝড়ে একাধিক উপজেলায় উপড়ে গেছে গাছ। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভাঙার পাশাপাশি অনেক ঘরবাড়ি তছনছ হয়েছে। এর মধ্যে শিবগঞ্জ, দুপচাঁচিয়া, আদমদীঘি, সোনাতলা, শাজাহানপুর উপজেলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকায় বোরো ধান ঝড়ো বাতাসে জমিতে নুয়ে পড়েছে। কোনো কোনো স্থানে ধানের গোড়া ভেঙে পানিতে ডুবে গেছে। ধান ছাড়াও বগুড়ায় ভুট্টা, কলা ও সবজির জমিও ঝড়ের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শাজাহানপুরের বামুনিয়া গ্রামের মাহমুদ আলী নামে এক কৃষকের সঙ্গে কথা হয়। তার আড়াই বিঘা জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এ ধানগুলো আর সপ্তাহখানেকের মধ্যে কাটার উপযোগী হতো। মাহমুদ আলী বলেন, ‘ধানগুলো এভাবে পড়ে থাকলে সব নষ্ট হবে। এ জন্য একজন শ্রমিক জোগাড় করে দুজনে মিলে ধান কেটে ঘরে নিয়ে যাচ্ছি।’ একই অবস্থার কথা জানান দুপচাঁচিয়ার জিয়ানগর ইউনিয়নের কৃষক আজিজার রহমান। তার চার বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে পারছেন না। শিবগঞ্জের দহিলা গ্রামের ভুট্টাচাষি ইউসুফ বলেন, ‘আমার ৪০ শতাংশ ভুট্টাক্ষেত একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কষ্ট করে ফসল লাগিয়েছিলাম। ঝড়ে আমার স্বপ্ন ভেঙে গেছে।’ জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, কালবৈশাখীতে বগুড়ায় ১৪ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৯০ হেক্টর জমির শাকসবজি, ৫০ হেক্টর জমির ভুট্টা ও ১৫ হেক্টর জমির কলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘বোরো ধানের জমি বেশি ঝড়ের কবলে পড়েছে। তবে এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ এখন ধান প্রায় পেকে গেছে। তা ছাড়া ঝড়ে বৃষ্টি কম হওয়ায় কোথাও পানি জমেনি। তাই ধান মাটিতে পড়ে থাকলেও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা খুব কম। তবে অন্য ফসলগুলো ক্ষতি বেশি উল্লেখ করে এনামুল হক বলেন, কলা ও শাকসবজির জমি ঝড়ে কম আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু এ ফসলগুলোই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ঝড়ের কারণে ঘরবাড়ি ও বৈদ্যুতিক খুঁটি নষ্ট হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মনোয়ারুল ফিরোজী জানান, শুক্রবারের ঝড়ে এ অঞ্চলের ১৯টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙেছে। ৯৮টি খুঁটির তার ছিঁড়েছে ও ৯৩টি মিটার ভেঙেছে। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অঞ্চলে প্রায় ১৮৫টি গাছ উপড়ে গেছে। এতে অনেক বৈদ্যুতিক তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মনোয়ারুল ফিরোজী বলেন, সকাল থেকেই এসব লাইনের মেরামতকাজ চলছে। এখনও শেষ হয়নি। আগামীকাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে । শুক্রবার রাতে প্রচণ্ড ঝড়ে সোনাতলার রেললাইনের ওপরে তিনটি গাছ পড়ায় সান্তাহারগামী করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেন আটকা পড়েছিল। প্রায় ৪০ মিনিট পর গাছ সরিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। কালবৈশাখীর বিষয়ে বগুড়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজিব হোসাইন জানান, মার্চ-এপ্রিজুড়ে এমন একাধিক ঝড় হয়ে থাকে। এসব ঝড় অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রলয়ংকরী হয়। তবে আপাতত বড় কোনো ঝড়ের লক্ষণ নেই।

এ বিভাগের আরো খবর