নেত্রকোণা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসন থেকে একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক এমপি ও সাবেক গভর্নর এম জুবেদ আলী মারা গেছেন।
শনিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে ময়মনসিংহের নেক্সাস প্রাইভেট হাসপাতালে মারা যান বঙ্গবন্ধুর এই ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বিশিষ্ট আইনজীবী। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে যান।
নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী এম জুবেদ আলী ১৯৩০ সালের ২৫ ডিসেম্বর কেন্দুয়া উপজেলার কাউরাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫২ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে পরে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতিতে (বার) আইন পেশায় যোগ দেন। ছাত্রজীবনেই জড়িত হন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি একজন দক্ষ সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া পালন করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।
জুবেদ আলী ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথম এমএনএ নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৩, ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে এমপি নির্বাচিত হন। এমপি হিসেবে ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানেও সই করেন তিনি। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান এবং ময়মনসিংহ জেলার গভর্নর নিযুক্ত হন। ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ১১ বার। একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী ও সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি সর্বজনবিদিত।
ময়মনসিংহের সৈয়দ নজরুল কলেজসহ ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণার নিজ নির্বাচনি এলাকার বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
জুবেদ আলীর ভাতিজা নিয়ামুল কবীর সজল জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার মরদেহ কেন্দুয়া উপজেলার কাউরাট গ্রামের বাড়িতে নেয়া হবে। এরপর কেন্দুয়ার কাউরাট এবং উপজেলা সদরের হাইস্কুল খেলার মাঠ ও ময়মনসিংহে একাধিক জানাজা শেষে ময়মনসিংহের কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।
জুবেদ আলীর মৃত্যুতে নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়র রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী খান খসরু এবং জেলা পরিষদের প্রশাসক প্রশান্ত কুমার রায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।