ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের জন্য বরিশালের মেয়রের ফ্রি বাস সার্ভিসের থ্রি হুইলার চালকরা ক্ষোভ জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, এই লঞ্চঘাট থেকে নগরীর দুই বাস টার্মিনালে ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাদের। আর যাত্রীরা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বৃহস্পতিবার রাত থেকে লঞ্চে আসা যাত্রীদের জন্য ৩৫টি বাস চালু করেন। এগুলো বিনা মূল্যে যাত্রীদের নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী বাস টার্মিনালে পৌঁছে দিচ্ছে।
থ্রি-হুইলার চালকদের অভিযোগ, এতে তারা যাত্রী পাচ্ছেন না।
বরিশাল ঈদগাহ ময়দানের সামনে রাখা মাহিন্দ্রাচালক জোবায়ের খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে ঈদের সময় সারা রাত অপেক্ষা কইরা লঞ্চ আইলে একটা ভালো ট্রিপ নিয়া চইলা যাইতাম। প্রতি রাতে ২ হাজার টাকা মতো থাকত।
‘আর এহন গাড়ির মইদ্যে কয়েল জ্বালাইয়া বইয়া থাহা লাগে। একটা যাত্রীও ডাইকা জিগায় না।’
কর ভবনের সামনে থাকা থ্রি হুইলারের চালক মো. রবিউল বলেন, ‘মেয়র সাইবে এবার আর মোগো ঈদ করতে দেবে না। বৃহস্পতিবার রাইতে কোনো ট্রিপ পাই নাই। শুক্রবারও পাইলাম না।
‘মোগোও তো ঘর-সংসার আছে, ঈদ আছে। তয় এবার ধইরা নেলাম ঈদ নাই মোগো।’
ভাড়া নিয়ে থ্রি হুইলার চালকদের সঙ্গে দর কষাকষিতে যেতে না হওয়ায় খুশি অনেক যাত্রী।
মানামী লঞ্চে বরিশাল আসা তাবাচ্ছুম আন্নি বলেন, ‘ঈদে আগে বাড়ি ফিরলে নদী বন্দরের বাইরে একটা বিশৃঙ্খলা ছিল। থ্রি হুইলারের চালকরা ইচ্ছামতো ভাড়া হাকাত।
‘এবার বাইরে কোনো থ্রি হুইলার দেখলাম না। সুন্দর ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। ব্যাগ নিয়ে চালকদের টানাটানি নেই। সোজা ফ্রি বাস সার্ভিসে উঠে গেছি।’
যেসব যাত্রী বাসস্ট্যান্ডে নয়, শহরের বিভিন্ন এলাকায় যাবেন তাদের মধ্যে অভিযোগও আছে কারো কারো।
ঈদে বাড়ি ফেরা নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া এলাকার জিকু রহমান বলেন, ‘মেয়র সাহেব ফ্রি বাস সার্ভিস চালু না করে থ্রি হুইলারে যাত্রী পরিবহন মনিটর করতে পারতেন। এতে চালকরাও খুশি হতো আবার আমাদের জন্যও সুবিধা হতো।
‘অবশ্য এক দিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। ভাড়া নিয়ে আমাদের ভোগান্তি কমেছে।’
এ বিষয়ে মেয়র সাদিক বলেন, ‘লঞ্চে বাড়ি ফেরা মানুষকে যেন বরিশাল নদী বন্দর থেকে বের হয়ে যানজট বা ভাড়া নৈরাজ্যতে পড়তে না হয় সে জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে থ্রি হুইলারগুলোর জন্য সিরিয়াল করে দেয়া হয়েছে। তাদের সিরিয়াল অনুযায়ী যাত্রী পরিবহন করতে হবে।
‘বেশি ভাড়ার দূরের যাত্রী নেবে আর কম ভাড়ার কাছের যাত্রী নেবে না তা হবে না। যে প্রথমে থাকবে তাকেই যাত্রী নিয়ে যেতে হবে। সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা বিষয়টি তদারকি করছে।’