বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাষ্ট্রপতি হতে চেয়েছিলেন মুহিত

  •    
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২২ ১৭:১১

রাষ্ট্রপতি হওয়ার গুঞ্জন বিষয়ে মুহিত বলেছিলেন, ‘আমার একটা মনোবাসনা ছিল রাষ্ট্রপতি হওয়ার। কিন্তু না হওয়াতে কোনো ক্ষোভ বা দুঃখ নেই। সবকিছুই একটা নিয়মে হয়ে থাকে।’

ছিলেন আমলা। পেশাজীবনে শীর্ষ পদে আরোহন করেছিলেন। কাজ করেছেন নানা বিশ্ব সংস্থায়। এরপর তিন সরকারের আমলে ছিলেন অর্থমন্ত্রী। সংসদে ১২ বার বাজেট পেশ করার রেকর্ড গড়েছেন। লেখালেখি, গবেষণা, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ নানা ক্ষেত্রে ছিল সরব বিচরণ। সাফল্যও এসেছে সব ক্ষেত্রে। নিজেই বলেছেন, ‘জীবনের প্রাপ্তিতে আমি মহাখুশি’।

একটি সফল জীবন যাপন করে গেছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। তবু একটি ইচ্ছে তার অপূর্ণই থেকে গেছে। রাষ্ট্রপতি হওয়ার ইচ্ছে ছিল এই রাজনীতিবিদের। তবে শেষ ইচ্ছা পূরণ না হওয়ার জন্য দুঃখ নেই বলেও জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

১৭ মার্চ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এমনটি বলেছিলেন আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা।

শুক্রবার রাত ১টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান মুহিত। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

অনেক দিন ধরেই অসুস্থ মুহিত লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন। এর মধ্যে করোনায়ও আক্রান্ত হন। হাসপাতালেও ভর্তি করা হয় তাকে। কিছুটা সুস্থ হয়ে গত ১৪ মার্চ সিলেট ফেরেন মুহিত।

এরপর থেকে সিলেটের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে দেখতে ভিড় করছেন নগরীর হাফিজ কমপ্লেক্সের বাসায়।

ওই বাসায়ই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মুহিত বলেছিলেন, ‘৮৮ বছর অনেক লম্বা সময়। এই সময়ে বেঁচে আছি, এটাও একটা বড় প্রাপ্তি। রোগশোক থাকবেই। তারপরও অনেকটা ভালো আছি।’

রাষ্ট্রপতি হওয়ার গুঞ্জন বিষয়ে মুহিত বলেছিলেন, ‘আমার একটা মনোবাসনা ছিল রাষ্ট্রপতি হওয়ার। কিন্তু না হওয়াতে কোনো ক্ষোভ বা দুঃখ নেই। সবকিছুই একটা নিয়মে হয়ে থাকে।’

সিলেটে গত ১৬ মার্চ তাকে ‘গুণীশ্রেষ্ঠ সম্মাননা’ দেয় সিটি করপোরেশন।

সম্মাননা অনুষ্ঠানে শৈশবের স্মৃতিচারণা করে মুহিত বলেছিলেন, ‘আমার শৈশব কেটেছে গ্রামে। গ্রামের জীবন খুব উপভোগ্য ছিল। সেখানে যে স্বাধীনতা পাওয়া যায় তা আর কখনো পাওয়া যায় না। পরে সিলেট শহরে এসে সুরমা নদীর পাড়ে স্কুলে ভর্তি হই। সেই সময়টাও ছিল আনন্দের। তবে মাঝে মাঝেই সাম্প্রদায়িক ইস্যু মাথাচাড়া দিত।’

সাম্প্রদায়িকতা প্রসঙ্গে মুহিত বলেছিলেন, ‘সাম্প্রদায়িক অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করা, এটি ভদ্রতার মধ্যে নিয়ে আসা একজন জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তির জীবনের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। আমি মনে করি, এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমি ৮৮ বছর পূর্ণ করেছি। এটাই আমার মহাতৃপ্তির কারণ; এটাই মহাপ্রাপ্তির কারণ।’

তিনি বলেছিলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্য, এখানে সাম্প্রদায়িক ইস্যু এসে যায়। এখানে সাম্প্রদায়িক দুর্বলতা খুব বেশি। আগেও ছিল। এখনও রয়েছে। তবে এখন হয়তো অনেক ভদ্র হয়ে যাচ্ছে।’

সিলেটকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহর উল্লেখ করে তিনি সেদিন বলেন, ‘সিলেটে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে হযরত শাহজালাল (রহ.) এসেছিলেন। আমরা বেশির ভাগ মানুষই তার মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। ধর্মাচার পালন করেও আসছি।

‘আমাদের এখানে অন্যান্য ধর্মের আনুষ্ঠানিকতাও সমানভাবে পালিত হয়। এখানে যে মহাসমারোহে পূজা হয়, দেশের অনেক স্থানেই তেমনটি হয় না। এখানকার ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য বহু পুরোনো।’

মুহিত বলেন, ‘আমি আমার জীবন নিয়ে গর্বিত। নিজেকে নিয়ে গর্ব করার মতো মহৎ কিছু নেই। অনেকে হয়তো একে আত্মগরিমা বলবেন। কিন্তু এটা অন্যায় নয়। বরং এর জন্য নিজেকে গড়ে তুলতে হয়।’

চার দিনের সফর শেষে ১৮ মার্চ ঢাকায় ফেরেন মুহিত। সিলেট ত্যাগকালে এক বিবৃতিতে এই ভাষাসংগ্রামী বলেন, ‘প্রায় দুই বছর পর গত ১৪ মার্চ আমি সিলেটে আসি। দীর্ঘদিন ধরেই সিলেটে আসার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। চিকিৎসকদের অনুমতি না থাকায় আসা হয়নি।

‘ছেলে ১৪ মার্চ আমাকে সিলেটে নিয়ে আসে। এই চার দিনে অনেক প্রিয়জনের সাথেই দেখা হয়েছে, আবার অনেকের সাথেই দেখা করার সুযোগ হয়নি। ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই আবার সিলেটে আসব, দেখা হবে, কথা হবে সকলের সাথে। আপনাদের জন্য দোয়া রইল। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর