ঈদযাত্রায় ঘরমুখো যাত্রীর চাপ বেড়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে।
বাস কাউন্টারগুলোতে অন্য দিনের তুলনায় যাত্রীর ভিড় বেশি দেখা গেছে। যানবাহনের চাপে দুই মহাসড়কের কিছু কিছু পয়েন্টে যানজটের কথা জানা গেছে। কোথাও থেমে থেমে চলছে গাড়ি।
শনিবার ভোর থেকে এ দুই মহাসড়ক হয়ে নিজ বাড়িতে যেতে শুরু করেছেন মানুষ। তাদের মধ্যে পোশাক ও শিল্পকারখানার মানুষ বেশি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, কাচঁপুর থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন এ পথের বেশির ভাগ মানুষ। এ সড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে ৩০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে মদনপুর, মোগরাপাড়া যানজটের খবর জানা গেছে, গাড়ি চলছে থেমে থেমে । এর মধ্যে মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় গাড়ির চাপ বেশি।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজ থেকে যাত্রমোড়া ও ভুলতা এলাকায় কিছুক্ষণ পরপর যানজটে পড়ছেন যাত্রীরা। এ সড়কের প্রায় ২১ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বরাব, রূপসীতেও ধীর গতিতে যান চলাচল করছে। পাশাপাশি সড়কের পাশের বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা গেছে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়।
বাসের অপেক্ষায় থেকে ভাড়া বেশি রাখাসহ বাস না পাওয়ার ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন তারা।
কুমিল্লাগামী যাত্রী মানিক চন্দ্র ধর সাইনবোর্ড এলাকায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানে বাসে সিট না পেয়ে মেয়ের জামাতা ঢাকার দিকে গেছে, সেখান থেকে সিট নিয়ে আসবে। এরপর গাড়ি সাইনবোর্ড আসার পর আমি ও আমার স্ত্রীসহ আমার দুই মেয়ে ও নাতনি গাড়িতে উঠব। এখানে বেশি ভাড়া দিয়েও গাড়িতে সিট পাওয়া যাচ্ছে না।’
পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন সোহেল খান। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী যেতে শিমরাইল এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা সিস্টেম হলো? ঈদ উপলক্ষে আগে টিকিট কাটলাম, তাও সময়মতো বাস আসছে না। আবার শুনলাম সড়কেও নাকি গাড়ির চাপ আছে। মনে হচ্ছে যানজটেও পড়তে পারি।
‘যারা সড়কের দায়িত্বে আছেন, তারা ভালো কাজ করছেন; তবে তাদের আরও তৎপরতা বাড়ানো দরকার। কারণ ঈদ যত কাছে আসে, মানুষের ভোগান্তি তত বাড়তে থাকে।’
একই পথের আরেক যাত্রী মোহাম্মদ সুজন বলেন, ‘এক গাড়ির টিকিট বিক্রি করে আরেক গাড়িতে উঠিয়ে দিচ্ছেন কাউন্টারম্যানরা। ২৫০ টাকার টিকিটের দাম নিল ৪০০ টাকা।’
পোশাকশ্রমিক আরমান মিয়া বলেন, ‘গাড়ি পাইতাছি না, যেগুলো আসে ভাড়া বেশি চায়। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে রোদে দাঁড়ায় আছি। কোথাও বসার জায়গা না পেয়ে ওরা ব্যাগের ওপর বসছে। এমনিতেই নানা ভোগান্তি, তার ওপর গরম। রাস্তায় বাচ্চাদের নিয়ে বের হলে আরও বেশি ভোগান্তি হয়।’
সালমা বেগম নামের আরেক পোশাকশ্রমিক বলেন, ‘১ ঘণ্টা হলো টিকিট কাটছি, কিন্তু বাস এখনো আসে নাই।’
সাইনবোর্ডে একটি বাস কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাড়া বেশি নিচ্ছি না, অনেকে নিচ্ছে। ঈদ আসছে তো, এ কারণে নিচ্ছে। বিকেলে মানুষ আরও বাড়ব, তখন ভাড়াও বাড়ব।’
মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার আলী আহাম্মদ খান। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তিন ধাপে ২৪ ঘণ্টা ৬৭০ জন কাজ করছেন। যেখানে গাড়ির চাপ বাড়ছে, তা দ্রুত ক্লিয়ার করা হচ্ছে। মহাসড়কে বড় ধরনের যানজট নেই।’