ঈদের লম্বা ছুটিতে এবার বেশির ভাগ মানুষ আগেভাগে ঢাকা ছাড়ছেন। গাবতলী টার্মিনালে ভিড় তাই স্বাভাবিক সময়ের মতোই। অধিকাংশই যানজট এড়াতে ভেঙে ভেঙে পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন দূরপাল্লার বাসের টিকিটও মিলছে তাৎক্ষণিক।
যাত্রীরা কোনো ঝামেলা ছাড়াই কাউন্টার থেকে এসি ও ননএসি বাসের টিকিট কেটে নিজেদের গন্তব্যে যাত্রা শুরু করতে পারছেন। শনিবার ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গাবতলী টার্মিনাল এলাকায় এমন চিত্রের দেখা মিলেছে। এই সময়ের মধ্যে গাবতলী এলাকায় যাত্রীর চাপ ছিল না বললেই চলে।
জিআর পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম হোসেন বলেন, ‘সাধারণত দূরপাল্লার টিকিট অগ্রিম বিক্রি করা হয়। এবার এই টিকিট তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি যাত্রীরা নিতে পারছেন। আগের তুলনায় ঘাটে ফেরি বৃদ্ধি করায় যানজট নেই।’
ছোট ভাই মতিউরকে নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি যাচ্ছেন জাহাঙ্গীর। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জননী পরিবহনের কাউন্টারে এসে ননএসি বাসের টিকিট নিয়েছেন তিনি। জাহাঙ্গীর বলেন, ‘এবারই প্রথম আগে টিকিট না কেটে সরাসরি কাউন্টারে টিকিট পেলাম। তবে ভাড়া একটু বেশি।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুল ইসলাম রোমেন বলেন, ‘ঝিনাইদহ সদর যাব মায়ের সঙ্গে। কাউন্টারে এসে তাৎক্ষণিক টিকিট মিলেছে।’
ঢাকা-মাদারীপুর রুটের সার্বিক পরিবহনের কাউন্টারম্যান মো. শওকত বলেন, ‘ঈদের তিন দিনের ছুটির আগে এবার মে দিবস আর শুক্র-শনি মিলিয়ে মোট ছয় দিনের ছুটি পেয়ে গেছে মানুষ। তাছাড়া ভোগান্তি এড়াতে অনেকে পরিবারের সদস্যদের আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। সে কারণে ছুটি শুরুর পর উপচে পড়া ভিড় আর হচ্ছে না। ’
তিনি বলেন, ‘যে যার মতো সুবিধা অনুযায়ী বাড়ি যাচ্ছে। আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হতো, এখন রেগুলার যাত্রীও তেমন নাই।’
ট্রাফিক পুলিশের সদস্য মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘এবার আসলেই স্বস্তির যাত্রা হচ্ছে। গত কয়েক দিনের পর্যবেক্ষণে কোনো ধরনের ঝামেলা ও ভোগান্তি চোখ পড়েনি। সঠিক সময়ে গাড়িগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। অনেক মানুষ পরিবহনে না গিয়ে ভেঙে ভেঙে চলে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত আমিনবাজার সেতুর গোড়া থেকে মাজার রোড পর্যন্ত কোনো যানজট ছিল না। যানবাহনগুলো নির্ধারিত সময়ে ছেড়েছে। উত্তরবঙ্গের বাসগুলো রাতেই ছেড়ে গেছে বেশির ভাগ। ছোট গাড়ি আর মোটরসাইকেল নিয়ে মানুষ খুব ভোরে সেহেরির পরপরই বেরিয়ে পড়েছেন।’
ভোর থেকেই গাবতলী টার্মিনালের সামনে ‘সেলফী’ পরিবহনের আধিপত্যের দেখা মিলছে।। একজ সেলফী কর্মী ‘ঘাট ৩০০’ বলে চিৎকার করে যাত্রী তুলছিলেন। এ ছাড়া পদ্মা দ্রুতগামী পরিবহনের বাসটি যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করছে।
বেসরকারি চাকরিজীবী সোহাগ বলেন, ‘যানজট এড়াতে নিজের বাইকটি নিয়ে বের হয়েছি। রাস্তায় কোনো যানজট ছিল না। এক ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মধ্যে ফেরিতে পৌঁছে যাব বলে মনে করছি।’