বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত আর নেই

  •    
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২২ ০১:৩১

মুহিতের পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশানের আজাদ মসজিদে প্রথম জানাজা ও বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। দুপুর ১২টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। এরপর নেয়া হবে সিলেটে।

আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আর নেই। শুক্রবার রাত ১টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছে ৮৮ বছর।

মুহিতের ব্যক্তিগত সহকারী কিশোর ভট্টাচার্য জনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পারিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশানের আজাদ মসজিদে মুহিতের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। দুপুর ১২টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। সেখান থেকে মরদেহ নিযে যাওয়া হবে সিলেটে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন।

আবুল মাল আবদুল মুহিতের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও মুহিতের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

মুহিতের বর্ণাঢ্য জীবন

আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. আবদুল হাফিজ এবং মা সৈয়দা শাহার বানু।

মুহিত ১৯৫১ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ ও প্রথম স্থান লাভ করেন।

১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ১৯৫৫ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।

মুহিত ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৬ সালে লাহোরে সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। মহকুমা হাকিম (এসডিও) হিসেবে তার প্রথম কর্মস্থল ছিল তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতান। পরে তিনি কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৫৭-১৯৫৮ সলে বৃটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে ডিগ্রি নেন। ১৯৬০-১৯৬৯ সালে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি সরকার কর্তৃক তমগা-এ-খেদমত খেতাবে ভূষিত হন। পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা কমিশন প্রধান ও ডেপুটি সেক্রেটারি থাকাকালে তিনি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার বৈষম্য সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রদান করেন। প্রতিবেদনটি পাকিস্তান জাতীয় কংগ্রেসে প্রদত্ত পূর্ব ও পশ্চিম বৈষম্য প্রসংগে প্রথম প্রতিবেদন।

১৯৬৯ সালে মুহিত যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাসের ইকনমিক কাউন্সিলর পদে যোগ দেন। এরই মধ্যে গড়ে ওঠে ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান। ১৯৭১ সালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনিই প্রথম পাকিস্তানি কূটনীতিক, যিনি বাংলাদেশের পক্ষে পাকিস্তানের কূটনৈতিক দায়িত্ব ত্যাগ করেন। দেশ স্বাধীনের পর তাকে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকারের পরিক্ল্পনা সচিব এবং ১৯৭৭ সালে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়।

কৃতী এই ব্যক্তিত্ব ১৯৮১ সালে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। তিনি বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, আইডিবি ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করেন।

তিনি ১৯৮২-১৯৮৩ সালে সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪-১৯৮৫ সালে তিনি তৎকালীন সরকার থেকে অবসর নিয়ে আমেরিকার প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং ফেলো হিসেবে অধ্যাপনা করেন।

দেশে ফিরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে অংশ নেন তিনি। নির্বাচনে জয়ী না হলেও ’আলোকিত সিলেট’ গড়ার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্নভাবে সিলেটসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি সিলেট-১ আসনের এমপি নির্বাচিত হন। তিনি ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

২০১৯ সালের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে জাতীয় সংসদে তিনি সর্বাধিক ১৩টি জাতীয় বাজেট পেশ করেন।

এ বিভাগের আরো খবর