বরিশাল নগরীর কাশিপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে দুই পক্ষের ১১জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের একজনের কাছ থেকে একটি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে কাশিপুরের গণপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা অয়ন হাওলাদার বলেন, ‘জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার আসাদ ও জাফরের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে মামলায় আমরা জিতেছি। এরপরও তারা নানাভাবে আমাদের হুমকি দিতো। বিকাল ৪টার দিকে আমাদের জমিতে সাইনবোর্ড টাঙানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় তারা আমাদের ঘরে হামলা চালায়। এক পর্যায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে।
‘পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। একই সঙ্গে আমার বাবা আবুয়াল হোসেন, নানা মোজাম্মেল হক, মামা তমালকেও আটক করে পুলিশ। আমার নানা মোজাম্মেল হকের কাছে একটি লাইসেন্স করা পিস্তল ছিল। হামলা হওয়ার পরও সেটি তিনি প্রদর্শন করেননি। এরপরও তাকে ধরে নিয়ে গেছে।’
আবুয়াল হোসেনের ভাইয়ের ছেলে খসরু হাওলাদার জানান, জুমার নামাজের পরপর তার চাচা কাউনিয়া থেকে দুই জনকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করেন। তাদের মধ্যে তমাল কোমর থেকে পিস্তল বের করে তার ছোট ভাই আসাদ ও জাফরের দিকে তাক করেন। এতে জাফর ভয়ে দৌড়ে ঘরে প্রবেশ করে। পরে অস্ত্রধারী দুজনকে নিয়ে আবুয়াল হোসেন তার ঘরে অবস্থান করলে স্থানীয়রা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
তিনি জানান, এর মধ্যে কেউ জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চায়। পুলিশের একটি টিম আবুয়াল হোসেনের ঘরে গেলেও অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার করেনি। এতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ শুরু করলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এ সময় তার স্ত্রী, ভাই, দুই বোন এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। একই সঙ্গে দুই অস্ত্রধারী তমাল ও হেমায়েত উদ্দিনকেও আটক করা হয়।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে একটি ঘর ঘিরে ছিল কয়েক শ মানুষ। ওই ঘরের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বেশ কয়েকজন ছিল।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়দের বিক্ষোভ থামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। ওই ঘর থেকে দুই পক্ষের ১১ জনকে একটি পিস্তলসহ আটক করা হয়। তমাল নামের এক ব্যক্তির কাছে পিস্তলটি পাওয়া গেছে। তাদের দাবি, পিস্তলটি লাইসেন্সকৃত। আমরা যাচাই বাছাই করছি। এক পক্ষের আবুয়াল হোসেন, হেমায়েত, মোজাম্মেল হক, তমাল এবং অপর পক্ষের নারীসহ সাত জনকে আটক করা হয়েছে।’
বরিশাল মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) জাকির আলম মজুমদার বলেন, ১১ জনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এখন জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’