২০ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবিতে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু অপহরণের ঘটনায় পটুয়াখালী ও বরগুনা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ছয়জনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
পটুয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত বিচারক মো. আল-আমিন গত বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তবে এ ঘটনায় ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মূল পরিকল্পনাকারী মামুন ওরফে ল্যাংড়া মামুনসহ অপর চার আসামির রিমান্ড শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছে ৫ মে। ওই দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের পটুয়াখালী আদালতে হাজির করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের অধিকতর জিজ্ঞাসা এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আসামিদের জিঙ্গাসাবাদ প্রয়োজন। তা ছাড়া মামলার তদন্তের স্বার্থেও আমরা আসামিদের জিঙ্গাসাবাদ করি।’
তিনি জানান, অন্য একটি মামলায় ল্যাংড়া মামুনসহ অপর চার আসামি ঢাকার ডিবি পুলিশের রিমান্ডে থাকায় তাদের পটুযাখালীতে আনা সম্ভব হয়নি। তবে শিবু অপহরণ মামলায় তাদের রিমান্ডে আনার আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ৫ মে শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে আদালত। ওই দিন ঢাকার ওই চার আসামিকে পটুয়াখালীর আদালতে হাজির করা হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইনস্পেক্টর মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুরের কাগজ হাতে পেয়েছি। আশা করি, ঈদের পর তাদের জিঙ্গাসাবাদ করা হবে। ঈদের আগে সময় নেই, কাজের চাপও অনেক। সব মিলিয়ে ঈদের পর ছাড়া আসামিদের রিমান্ডে আনা সম্ভব না।
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল রাতে ২০ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবিতে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে গলাচিপা থেকে অপহরণ করা হয়। পরের দিন রাতে শহরের এসপি কমপ্লেক্সের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে শিবু দাস ও তার চালককে হাত-পা বাঁধা ও বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ১৩ এপ্রিল রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান পারভেজসহ মোট ছয়জনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।
১৪ এপ্রিল এক প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় সেই ছয়জনকে শিবু অপহরণ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দাবি করলেও পারভেজ, শামিম আর সুমনের বিষয়ে যৌক্তিক কোনো কারণ উল্লেখ করেনি পুলিশ। এ সময় ওই তিন আসামি সাংবাদিকদের সামনে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমরা নির্দোষ, আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে। আপনারা বিষয়টি দেখেন। আমরা এই শহরের সন্তান, আমরা এত বড় অন্যায় করতে পারি না। আমরা রাজনীতি করি।’
এরপর ঢাকা থেকে জসিম ওরফে বিআরটিসি জসিম নামে একজনকে আটক করার পর তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর দুদিন পর ঢাকার ডিবি পুলিশ এ অপহরণের মাস্টারমাইন্ড ল্যাংড়া মামুনসহ আরও চারজনকে চার হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে।