রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেনের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে টর্চার সেলে নির্যাতন করার অভিযোগ তুলেছেন সংগঠনটির একটি অংশ।
কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের একটি অংশ। পরে বিক্ষোভ করেন তারা।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর বেতপট্টি মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সেখানে বক্তব্য দেন মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাহদী হৃদয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালের ২০ জুলাই শফিউর রহমান স্বাধীনকে সভাপতি ও শেখ আসিফকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রলীগ কমিটি করা হয়। ২০১৬ সালের ৩০ মে ওই কমিটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়।
এক বছরের কমিটি সাত বছর ধরে চলছে। মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের তাগিদ দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল পর্যায়ে আলোচিত হয়ে আসছে।’
কী ঘটেছিল
আল মাহদী হৃদয় বলেন, “আমি গত ২৭ এপ্রিল রাত ৩টা ১০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিই। সেখানে লেখা ছিল ‘কি একটা অবস্থা, রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ কমিটি চাই এ জন্য প্রেসিডেন্ট ব্লক দিয়ে রাখছে। আজ দেখি সেক্রেটারি আনফ্রেন্ড করে দিছি। এই হচ্ছে তাদের রাজনীতি। আপনাদের কমিটি কী কোনো দিন যাবে না।’
‘পরের দিন বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাবসংলগ্ন এলাকায় আমি একা বাইক চালিয়ে যাওয়ার পথে রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেন এবং যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলাম আজিজের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তখন তাদের সঙ্গে আট থেকে দশজন ছেলে ছিল।
‘আমাকে যুগ্ম সম্পাদক আজিজ ডাক দিলে তাদের সঙ্গে দেখা করি। এ সময় হঠাৎ তারা আমার ওপর হামলা করে এবং জোর করে র্যাব-১৩ অফিসসংলগ্ম রেলগেট পার্শ্ববর্তী এলাকা লিচুবাগানে তুলে নিয়ে যায়। সেটা তার টর্চার সেল। পরে মহানগর ছাত্রলীগের অন্যান্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সেখানে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে।’
সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এই ঘটনার বিচার চান। এ ছাড়া নতুন কমিটি গঠনেরও দাবি জানান।
হৃদয় বলেন, ‘শেখ আসিফের ওই টর্চার সেলে রংপুর আইএসটির সাধারণ সম্পাদক সজীব, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিস, পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রতনসহ চারজনকে নির্যাতন করা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে আরেক যুগ্ম সম্পাদক তানভীর খোরশেদ তুষার বলেন, ‘এর আগেও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকের অনুষ্ঠানে নানক ভাইয়ের পিএস এবং এপিএসের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং ধাক্কাধাক্কির কারণে ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাকে বহিষ্কার করা হয়। পরে দুই মাস পর সেই আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।’
এসব বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফকে তার ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি শামীম তালুকদার রাঙ্গা, যুগ্ম সম্পাদক শুভ সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলে এলাহী তন্ময়, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল ইসলাম।