দুর্যোগ পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাশ্রম দেয়া স্বেচ্ছাসেবীদের কার্যক্রমকে এবার আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবা নীতিমালা-২০২২-এর খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সালে দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে বিশেষ অর্গানাইজেশন করতে বঙ্গবন্ধু একটা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিপিপি বা সাইক্লোন প্রিপারনেস প্রোগ্রামের অধীনে ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তারা ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় বড় ভূমিকা রাখতেন।
‘কোভিড পরিস্থিতিতেও স্বেচ্ছাসেবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সংবিধানের ১৬ ও ৫৯ অনুচ্ছেদে বিভিন্ন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ এ ধরনের বিষয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে একটা স্বেচ্ছাসেবী নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নিজের এলাকায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কাজে অংশ নেয়ার স্বাধীনতা থাকবে। কমিউনিটি শিক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী গ্রুপ, দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত, বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার গ্রুপ, পরিবেশ গ্রুপ, কমিউনিটি সহযোগিতা গ্রুপ, সংগঠিত সামাজিক গ্রুপ, সমন্বিত কমিউনিটি কার্যক্রম, কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠান উৎসব, খেলাধুলা, বিনোদন ও অবসরের কার্যক্রম, করপোরেট স্বেচ্ছাসেবা, সেবা প্রদান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অনলাইনে স্বেচ্ছাসেবা। এই স্বেচ্ছাসেবা কাজগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য একটা স্বেচ্ছাসেবা নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
‘স্থানীয় সরকার বিভাগ এই উদ্যোগ নিলেও স্বেচ্ছাসেবী কাজ দেখভালের জন্য অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংযুক্ত থাকবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সমাজকল্যাণ, যুব উন্নয়ন, মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর সঙ্গে যুক্ত হবে।’
সচিব বলেন, ‘লিড মন্ত্রণালয় হিসেবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থাকছে। সরকার এটা প্রাথমিকভাবে অনুমোদন করেছে। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে জাতিসংঘ থেকেও আমাদের বলা হয়েছে যে আমাদের একটা স্বেচ্ছাসেবী নীতিমালা থাকা দরকার। কারণ স্বেচ্ছাসেবায় বাংলাদেশ অনেকটা পাইওনিয়র বা পথপ্রদর্শক।
‘১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে যেভাবে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে, সেখান থেকে ধারণা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ধরনের কাজ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই নীতিমালার ফলে বাইরের স্বেচ্ছাসেবীরা প্রয়োজনে আমাদের দেশে এসে কাজ করতে পারবে। আমাদের দেশের স্বেচ্ছাসেবীরাও দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারবে।
‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবী রয়েছে। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের অধীনে ৬৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রার্ড আছে।’