বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হতাশার তরমুজ!

  •    
  • ২৮ এপ্রিল, ২০২২ ১৩:০৭

শিবগঞ্জের কৃষক ফয়জুল হক বলেন, ‘বর্গা নিয়ে ৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। শিলাবৃষ্টির আঘাতে তরমুজ ফেটে গেছে। এ বছর এত পরিমাণে শিলাবৃষ্টি হয়েছে যে আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি।’

ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকদের কাছে লাভজনক ফসল তরমুজ এখন হতাশার নাম। প্রতি বছর এ অঞ্চলের চাষিদের উৎপাদিত তরমুজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। তবে এ বছর দফায় দফায় শিলাবৃষ্টির আঘাতে তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় তরমুজ চাষ হয়েছিল ১০৩ হেক্টর জমিতে। শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ৩৫ হেক্টর জমির তরমুজ।

পীরগঞ্জের কৃষক সরিফ উদ্দীন একজন বর্গাচাষি। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও চিনিকল কর্তৃপক্ষ থেকে ৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষ করি। ঋণের ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তরমুজ চাষে।

‘সব মিলে তরমুজের ফলন ভালো হওয়ায় দ্বিগুণ লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। তবে ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারব না এবার। শিলায় আমার সব তরমুজ নষ্ট হয়েছে।’

শিবগঞ্জের কৃষক ফয়জুল হক বলেন, ‘বর্গা নিয়ে ৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। শিলাবৃষ্টির আঘাতে তরমুজ ফেটে গেছে। এ বছর এত পরিমাণে শিলাবৃষ্টি হয়েছে যে আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি।’

রাণীশংকৈল বাঁচোরের কৃষক হবিবর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছর আমার ক্ষেত থেকে ট্রাকে ট্রাকে তরমুজ ঢাকায় নিয়ে যায় অনেক ব্যবসায়ী। তবে এ বছর তরমুজ আমাদের কাছে শুধুই হতাশা। খুব খারাপ একটা পরিস্থিতি পার করছি। লোকসানের পরিমাণ এত বেশি কখনও হয়নি। এবারে ফলন ভালো ছিল। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পরে আমরা সর্বস্বান্ত।’

মাঠের ফসলহানি নিরাশা করেছে ভোক্তাদেরও। তারা বলছেন, জেলায় উৎপাদিত তরমুজ বাজারে এলে কম দামে পাওয়া যায়। তবে এবার আর সেই সম্ভবনা নেই। যারা একটু সাশ্রয়ী দামে তরমুজ কিনবেন বলে ভেবেছিলেন, তাদের সেই আশা অপূর্ণই থেকে যাবে।

ভোক্তা সবুজ ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মৌসুমের শুরুর দিকে আমাদের অনেক চড়া দামে তরমুজ কিনে খেতে হয়। অনেক মানুষ আছে যারা জেলায় উৎপাদিত তরমুজের জন্য অপেক্ষা করে। কারণ বর্তমানে একেকটা তরমুজের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এ দামে অনেকে কিনতে আগ্রহ দেখায় না।

ঠাকুরগাঁওয়ে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৫ হেক্টর জমির তরমুজ। ছবি: নিউজবাংলা

‘তবে জেলার উৎপাদিত তরমুজ বাজারে এলে ৪০-৫০ টাকায় তরমুজ পাওয়া যায়। এ বছর জেলার প্রত্যেক উপজেলায় প্রচুর শিলাবৃষ্টি হয়েছে। জানি না তরমুজ আমি কম দামে পাব কি না।’

রোড বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী আইনুল হক বলেন, ‘বরিশাল, যশোরসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলা থেকে তরমুজ আমদানি করছি আমরা। অনেক চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে তরমুজ বিক্রি করতে হচ্ছে। জেলার তরমুজ বাজারে এলে কম দাম থাকে। তখন বিক্রিও ভালো হয়।’

ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষি কর্মকর্তা আবু হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিলাবৃষ্টির কারণে তরমুজ ক্ষতি হয়েছে। তবে আশা করা যায়, আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকদের ক্ষতি কিছুটা কমে আসবে। তবে এ বছর তরমুজচাষিরা হতাশাগ্রস্ত।’

এ বিভাগের আরো খবর